স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জনআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়নি : হামিদুর রহমান আযাদ
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির পর্যালোচনা চলছে। একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে ৫৪ বছর পার হলেও জনআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়নি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির পর্যালোচনা চলছে। একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে ৫৪ বছর পার হলেও জনআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়নি।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রাজবাড়ি জেলা আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে জেলা সেক্রেটারি মো: আলীমুজ্জামানের সঞ্চালনায় স্থানীয় পৌর কমিউনিটি সেন্টারে এ রুকন সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর অঞ্চল টিম সদস্য শামসুল ইসলাম বরাটি, অঞ্চল টিম সদস্য প্রফেসর (অব.) আবদুত তাওয়াব, সম্মেলনে দারসুল কোরআন পেশ করেন জেলা কর্মপরিষদ সদস্য, বালিয়াকান্দি উপজেলা আমির মাওলানা আব্দুল হাই জোয়ারদার।
সম্মেলনে আর উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমির মো. হাসমত আলী হাওলাদার, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিনসহ প্রমুখ।
এর আগে প্রধান মেহমান এক আবেগঘন পরিবেশে সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নবনির্বাচিত জেলা আমিরকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি থাকলেও মৌলিক কিছু বিষয় আজো উপেক্ষিত রয়ে গেছে। সংবিধানে সকল ক্ষেত্রে সমতার কথা বলা হলেও আমাদের তিনটি মূলনীতি সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আজো বাস্তবায়িত হয়নি। আইনের দৃষ্টিতে এখনো আমরা সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। কেউ জুলুমের শিকার হয়েছে দিনের পর দিন, আর কেউ অন্যায় করেও পার পেয়ে গেছে শাসক গোষ্ঠীর। শাসক শ্রেণির আত্মীয়-স্বজন সব সময়ই আইনের ঊর্ধ্বে থেকে গেছে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসির রেকর্ড এদেশেই আছে। আমাদের ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল। হুমকি, গুম ও হত্যার মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছিল। দিনের ভোট রাতেই সম্পন্ন করা হয়েছে। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছিল। পুলিশকে দলীয় কর্মীর মতো পেটোয়া বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করে নির্বাচনকে জালিয়াতির মহোৎসবে পরিণত করা হয়েছিল। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলে ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপন করে চরম বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতার পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে বর্বর জাতি হিসেবে পরিগণিত করা হয়েছে। জাতি নির্লজ্জতার কোন পর্যায়ে গেলে সেটা সম্ভব হয় তা সহজেই অনুমেয়।
প্রধান অতিথি বলেন, মানবিক মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল পরিকল্পিতভাবেই। তখন কেউ তার প্রাপ্য মর্যাদা ও সন্মান পায়নি বরং বারবার অপমানিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সকল মানুষের জন্য একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এমন একটা দেশের স্বপ্ন দেখি যেখানে হত্যা, সন্ত্রাস থাকবে না, যেখানে মানুষ নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারবে। চাঁদাবাজ, লুটপাট ও নৈরাজ্য থাকবে না। এই ধরনের একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে আমরা দেশবাসীর সার্বিক সহযোগিতা চাই।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আমরা স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করি। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না গত ১৬ বছরে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা কম ঘটেনি। সাগর রুনি নিহত হলেও সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার আজো পাওয়া যায়নি। লিখতে গিয়ে সাংবাদিক ভাইদের কলম থমকে গেছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে, মামলা হয়েছে, হুমকি দেয়া হয়েছে। সর্বোপরি বহু সাংবাদিককে দেশে ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা সবসময়ই এই ফ্যাসিস্টার অবস্থার অবসান চেয়েছি। আলহামদুল্লিাহ এই অবস্থার প্রাথমিক অবসান হয়েছে। অন্ধকার পরিবেশ এখন আর নেই। এ অবস্থা ধরে রাখার জন্য প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করে যেতে হবে। এই নতুন স্বাধীন দেশের বিরুদ্ধে নতুন করে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদেরকে দল-মত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে সজাগ ও সতর্ক থেকে ষড়যন্ত্রকারীদের সকল অপতৎপরতা নস্যাৎ করে দিতে হবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি