যেভাবে চাল ছোঁয়া হাইভোল্টেজের বিদ্যুৎ লাইন শেষ করে দিল একটি পরিবার
Share on:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের ভাঙ্গার পার গ্রামে বিদ্যুতায়িত হয়ে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মর্মান্তিক এই ঘটনার খবর পেয়ে নিহতদের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এত মানুষের ভিড়েও যেন শুনসান নীরবতা বিরাজ করছে সেই বাড়িতে। সবাই যেন স্তব্ধ হয়ে গেছেন। বিকাল ৪টায় গ্রামের জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নিহতদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার সেহরির পর বজ্রপাতে বসতঘর ছুঁই ছুঁই পল্লীবিদ্যুতের মেইন লাইন ছিড়ে টিনের চালে পড়ে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রতিবন্ধী ফয়জুর রহমানের বসতঘরের বেড়াও টিন দিয়ে তৈরি। ঘরে আগুন জ্বলতে দেখে প্রতিবন্ধী ফয়জুর রহমান দ্রুত দরজা খোলে বের হতে গিয়ে একে একে তিনি, স্ত্রী শিল্পী বেগম, মেয়ে ছামিয়া বেগম, ছাবিনা বেগম ও ছেলে ছায়েম আহমদ বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান।
তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে। ছোট্ট মেয়ে সুনিয়া (৬) এই দৃশ্য দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ে। আর এতেই সে প্রাণে বেঁচে গেছে। তবে তারও শরীর ঝলসে গেছে।
নিহত শিল্পী বেগমের মা আতাবুন বেগম জানান, ঘরে আগুন দেখে দরজা খুলে বের হতে গিয়ে সবাই আগুনে ঝলসে ও বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন। ভাগ্যক্রমে তার সব ছোট নাতনি সুনিয়া বেগম বেঁচে গেছে। তবে আগুনে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুয়েল আহমদ জানান, পল্লীবিদ্যুতের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই আজ তার ইউনিয়নের একটি পরিবারের ৫ সদস্যের মর্মান্তিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বসতঘরের টিনের চাল ছুঁই ছুঁই হাই ভোল্টেজের মেইন লাইন বছরের পর বছর ধরে টানানো রয়েছে। এগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করলে এমন ঘটনা ঘটতো না। তিনি এই দুঘর্টনার জন্য পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিকে দায়ী করেছেন।
জুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মইন উদ্দিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে লাশগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এনএইচ