ডিবিসি নিউজে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
Share on:
ডিবিসি নিউজে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর কর্তৃক ছাত্রশিবিরকে ‘অস্ত্রধারী সংগঠন ও উপস্থাপক কর্তৃক জামায়াত-শিবিরের সাথে জঙ্গি সম্পৃক্ততা’ উল্লেখ করে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার এবং ভিত্তিহীন খবর প্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
মঙ্গলবার (৩০ মে)এক প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, "কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই আওয়ামীলীগের ভারসাম্যহীন নেতাদের মতো ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর ও সংবাদ উপস্থাপক যে দায়িত্বহীন বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে আমরা বিস্মিত! হতবাক!
বক্তব্যগুলো নিকৃষ্ট ও সুপরিকল্পিত মিথ্যাচার। ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর ছাত্রশিবিরকে অস্ত্রধারী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কোন তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ছাত্রশিবিরের মতো একটি নিয়মতান্ত্রিক বৈধ ও ছাত্রজনতার প্রিয় সংগঠনকে তিনি অস্ত্রধারী সংগঠন বলেছেন, তা বিবেকসম্পন্ন মানুষের বোধগম্য নয়। যুগের পর যুগ আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র নৃশংসতায় নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ অসংখ্য মানুষ খুন হয়েছেন। এমনকি মায়ের পেটে থাকা শিশু পর্যন্ত ছাত্রলীগের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়েছে!
নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা পর্যন্ত আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে। যা ডিবিসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রচার হয়ে আসছে। যেখানে ছাত্রলীগ লিখে সার্চ করলেই অনলাইনে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারীদের ছবি ও ভিডিও সবার আগে সামনে চলে আসে, সেখানে চিহ্নিত অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে পাশ কাটিয়ে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরের এমন হীন-জঘন্য মিথ্যাচার তার অসুস্থ মানসিকতারই পরিচায়ক। এর আগেও তিনি টকশোতে এমন একপেশে বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন।
অন্যদিকে সাংবাদিকতার লেবাসে থাকা দায়িত্বজ্ঞানহীন উপস্থাপক আগবাড়িয়ে জামায়াত-শিবিরকে জঙ্গিবাদের সাথে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন, যা জনগণকে বিস্মিত করেছে। আমরা এই একপেশে সাংবাদিককে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশে জঙ্গিপনা শুরু হয়েছিল আ.লীগের আমলে এবং আ.লীগের শীর্ষ নেতা মির্জা আযমের ভগ্নিপতি বাংলা ভাইসহ শীর্ষ জঙ্গি নেতারা সকলেই ছিল আ.লীগ নেতাদের নিকটাত্মীয়।
গুলশানে হামলাকারী অন্যতম জঙ্গি রোহান আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে! ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে জেএমবির দুর্ধর্ষ তিন জঙ্গিকে ছিনতাই করা হয়েছিল ভালুকা থানা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান কামাল ওরফে যুবরাজের নির্দেশে। সরকারের তথাকথিত সাঁড়াশি অভিযানের সময়ও ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলার আসামি নড়াইল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গাজী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে নিশ্চিত করেন নড়াইল সদর থানার ওসি সুভাস বিশ্বাস। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও জঙ্গি ফাহিমকে ছাত্রশিবিরের সাথে জড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছিলেন, যা পরে মাদারীপুরের পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের মাধ্যমে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিল।
তা ছাড়াও জঙ্গিবাদী বহু ঘটনার সাথে আ.লীগের নেতাকর্মী ও তাদের সন্তানদের সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছে, যা ডিবিসি নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। তাদের এসব মস্তিষ্ক বিকৃত বক্তব্যে দেশবাসী মনে করে, কোনো দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে নয়; রবং আ.লীগের মুখপাত্রের ভূমিকায় থেকেই তারা এমন ন্যক্কারজনক বক্তব্য দিয়েছেন।
আমরা মনে করি, দেশে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ছাত্রশিবির নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ ছাত্রদেরকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কোনো প্রকার জঙ্গিবাদের সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, শিবির জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে না।"
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, "কোনো গোষ্ঠীর ক্রীড়নক হয়ে দায়িত্ব ভুলে মিথ্যাচার করা সাংবাদিকতা ও আইন পেশার দায়িত্বের প্রতি চরম প্রতারণার শামিল। এমন দায়িত্বহীন ভূমিকা অব্যাহত রাখলে জনগণের অনাস্থা আর ধিক্কার ছাড়া তারা আর কিছুই অর্জন করতে পারবে না, যা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়।"
নেতৃবৃন্দ বলেন, "ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীরের বিদ্ধেষপূর্ণ ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাইতে হবে।"
একইসাথে পবিত্র পেশায় নিয়োজিত থেকে মিথ্যাচার না করতে এবং ছাত্রশিবিরের প্রতিবাদ প্রচারের মাধ্যমে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়ার জন্য ডিবিসি নিউজ কর্তৃপক্ষের প্রতি নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান।
এন