ছাত্র সংঘর্ষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের উদ্বেগ
Share on:
বিগত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানান। এ সময় শিক্ষার্থীদেরকে তৃতীয় কোনো পক্ষের ইন্ধন ও উসকানির ফাঁদে পা দিয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার না হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকায় অবস্থিত ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এক শিক্ষার্থী। অভিজিত নামে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু ‘ভুল চিকিৎসায়’ হয়েছে বলে অভিযোগ উল্লেখ করে হাসপাতালটিতে হামলা চালায় তার সহপাঠীরা। পরে হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজেও ব্যাপক হামলা ও ভাংচুর চালায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ ও তাদের সহযোগী হয়ে আসা আরো কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর পাল্টা হিসেবেই আজ সোমবার দুপুর ১২টার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।
তার আগের দিন ওই দু’টি কলেজে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছিল ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে রোববার দিবাগত বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সকল পক্ষকে সংঘর্ষ পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চলছে। ঢাকার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ এরই অংশ, যা পতিত স্বৈরাচারের হাতকেই শক্তিশালী করছে বলে আমরা মনে করি।’
বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে নেতারা বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ শিক্ষাঙ্গনকে কারা পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করে তুলছে, কাদের ইন্ধন ও ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষায় নির্মম বলি হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ, তা দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা আমরা প্রত্যাশা করছি। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার বিচার দাবি করছি। সেই সাথে দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
নেতারা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জাতীয় স্বার্থে শিক্ষার্থীদের অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। ২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ দেশের প্রতিটি সঙ্কটময় মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ফলে দেশ গঠনে শিক্ষার্থীদের প্রতি গণআকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে তৃতীয় কোনো পক্ষ শিক্ষার্থীদের ঐক্য ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
নেতারা সকল প্রকার দ্বন্দ্ব ও সংঘাত পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে মতানৈক্যের সমাধান করে জুলাই বিপ্লবের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গঠনে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি