করোনায় মৃত্যুর সঠিক তথ্য মিলছে না, দায়ী চীন: ডব্লিউএইচও
Share on:
চীনের সরকার দেশটিতে করোনায় মৃত্যু সম্পর্কিত সঠিক তথ্য না দেওয়ায় মহামারিতে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ জানিয়েছেন।
সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ডব্লিউএইচওর সদরদপ্তরে আয়োজিত সেই সংবাদ সম্মেলনে গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে কোভিডজনিত অসুস্থতার কারণে বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৫০০ জনের। শতাংশ হিসেবে এই মৃতদের মধ্যে ৪০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র ও আমেরিকা মহাদেশের, ৩০ শতাংশ ইউরোপের এবং বাকি ৩০ শতাংশ পশ্চিম প্রশান্ত অঞ্চলের।’
‘কিন্তু এই তথ্য অসম্পূর্ণ; কারণ চীনের সরকার তাদের দেশে করোনার মৃত্যু সম্পর্কিত সঠিক ও নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য দিচ্ছে না। ফলে আমরা এখনও জানি না, গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে করোনায় ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে।’
২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর থেকে প্রায় তিন বছর দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, বিদেশ ভ্রমণে বিধিনিষেধসহ কঠোর সব করোনাবিধি জারি রেখেছিল চীন। শেষে জনগণের ব্যাপক বিক্ষোভের পর গত ডিসেম্বরে যাবতীয় বিধি শিথিল করে দেশটির সরকার।
কিন্তু তারপর থেকেই করোনা সুনামি শুরু হয় চীনজুড়ে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দেশটিতে বর্তমানে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। চীনের বেসরকারি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের ভিড়ে, এবং বেশিরভাগ শহরের ফার্মেসিগুলোতে করোনার ওষুধ শেষ হয়ে গেছে।
তবে দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার বর্তমান এই সংক্রমণ পরিস্থিতির হালনাগাদ কোনো তথ্য প্রকাশ করছে না। দেশটির সরকারি ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ২০২০ সালে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত চীনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে মোট ৫ হাজার ২৫৮ জনের।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা চীনকে বার বার বলছি— যেন সেখানকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের সঠিক ও নির্ভুল তথ্য দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা সেখান থেকে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাইনি।
করোনাভাইরাসের যে ধরনটি এখন সবচেয়ে বেশি মাত্রায় ছড়াচ্ছে— সেটির নাম এক্সবিবি.১.৫। ওমিক্রন গ্রুপের এই ভাইরাসটির আবির্ভাব ঘটেছে গত কয়েক মাস আগে।
সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক প্রত্যেক দেশকে করোনা রোগীদের নমুনা ভালোভাবে পরীক্ষা ও ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স উদ্ঘাটনের আহ্বান জানিছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এক্সবিবি১.৫ ভাইরাসটির আবির্ভাগ ঘটেছে অল্প কয়েক মাস আগে। সুতরাং এই মুহূর্তে এ ভাইরাসটির আরও একাধিক পরিবর্তিত ধরনের ক্রিয়াশীল থাকা খুবই স্বাভাবিক।’
‘ডব্লিউএইচও’র বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্রের প্রতি আমাদের আহ্বান— করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স উদ্ঘাটন করুন এবং আমাদের জানান। যদি এক্ষেত্রে কোনো সহযোগিতা লাগে— তাহলেও বলুন।’
এমআই