আমের-রিজওয়ানে সিডনিতে স্বস্তি পাকিস্তানের
Share on:
অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্মে সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না পাকিস্তানের। পার্থ-মেলবোর্ন দুই টেস্টেই ব্যাটিং ইনিংসে বিপর্যয় দেখেছে পাকিস্তানের ব্যাটিং ইউনিট।তবে সিডনিতে এসে আক্ষেপের ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান আর আমের জামাল।
এবারের সফরের শুরু থেকেই পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ যেন বুঝতেই পারছেনা অস্ট্রেলিয়ার পিচ আর বোলিংয়ের ধার। মেলবোর্নে কিছুটা লড়াইয়ের আভাস দিলেও তাতে লাভ হয়নি। সিডনির প্রথম সেশনে অবস্থা ছিল আরও শোচনীয়। প্রথম সেশনেই নেই পাকিস্তানের চার উইকেট। ৪৭ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর রীতিমত চোখে অন্ধকারই দেখছিল তারা।
ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্টে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আসে আঘাত। মিচেল স্টার্কের অফস্ট্যাম্পের বাইরে পড়া বলটা হালকা ইনসুইং ছিল। আব্দুল্লাহ শফিক চেয়েছিলেন ড্রাইভ করতে। কিন্তু বল ব্যাটের ছোঁয়া পেয়ে চলে যায় স্লিপে। অভিষিক্ত সামি আইয়ুব ফিরে যান দ্বিতীয় ওভারে। জশ হ্যাজেলউডের বলটা সলিড ডিফেন্স করতে চেয়েছেন। তবে এখানেও সুইংয়ের কারিশমা। ব্যাটের কানায় লেগে অ্যালেক্স ক্যারির হাতে ক্যাচ।
চার রানে দুই উইকেটের পর অধিনায়ক শান মাসুদকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস রক্ষার কাজে মন দেন বাবর আজম। তাতে খানিক স্বস্তি মিলেছিল ম্যান ইন গ্রিনদের জন্য। তবে সেটা সাময়িক। ব্যক্তিগত ২৬ রানে আউট বাবর। মেলবোর্নের পর এবারও কামিন্সে আটকালেন সাবেক অধিনায়ক। লেট ইনসুইং বুঝেই উঠতে পারেননি। এলবিডব্লিউতে ফেরেন তিনিও।
এরপর সউদ শাকিল আউট হয়েছেন বাইরে বল খোঁচা মেরে খেলতে গিয়ে। ৪৭ রানে নেই ৪ উইকেট। শেষ পর্যন্ত ইনিংস রক্ষা করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং শান মাসুদ।
তবে দলীয় স্কোর ১০০ পেরুনোর আগে আবার উইকেটের পতন। মিচেল মার্শের গুডলেন্থের বলে বেসামাল শান ক্যাচ দিয়েছেন সেকেন্ড স্লিপে। একইভাবে এর আগে আউট হয়েছিলেন। তবে নো বলে বেঁচে যান। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারেননি। এরপরে প্রতিরোধের শুরু করেন রিজওয়ান আর সালমান।
অজি বোলারদের তাণ্ডবের মুখে দুই ব্যাটারের জুটি ৯৪ রানের। তৃতীয় সেশনে তখন ওভারপ্রতি ৫ করে রান তুলেছিল দলটি। তবে সেখানে লাগাম টানেন কামিন্স। বাড়তি বাউন্সের বলে রিজওয়ানকে বোকা বানিয়েছেন। ৮৮ রান করা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার ফাইন লেগে ক্যাচ দেন জশ হ্যাজেলউডের কাছে।
সাজিদ খান এসে বেশি একটা সঙ্গ দিয়ে পারেননি। ২৩ বলে ১৫ রান করে কামিন্সের চতুর্থ শিকার তিনি। সালমান আঘাও ফেরেন ফিফটির পরেই। স্টার্কের বলে ট্রাভিস হেডকে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। হাসান আলীর উইকেট তুলে নিয়ে ফাইফার পূর্ণ করেন কামিন্স। ৭ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় পাকিস্তান।
দলের যখন ২৫০ করাই কঠিন কিছু। তখনই ম্যাজিক দেখাতে শুরু করেন আমের জামাল। শেষ উইকেটে মীর হামজাকে নিয়ে শুরু করেন পাল্টা প্রতিরোধ। চার পেসার আর নাথান লায়নের স্পিনেও দমানো যায়নি তাকে। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে জমা হওয়া দর্শকদের বিমোহিত করেছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ৯ চার আর ৪ ছয়ে ৮২ রান করেন তিনি।
৩১৩ রানে আমের যখন আউট হন, তখন অজিদের বিপক্ষে টেস্টে ক্রিকেটে দশম উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৬ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন দুজনে। অস্ট্রেলিয়া দিনের বাকি সময়ে ১ ওভারই সময় পেয়েছে। তাতে ৬ রান তুলেছেন বিদায়ী টেস্ট খেলতে নামা ডেভিড ওয়ার্নার। ক্রিজে আসার আগে বিপক্ষ দলের গার্ড অব অনারও পেয়েছেন এই অজি ব্যাটার।
এসএম