ডায়াবেটিস নিরাময় না নিয়ন্ত্রণ
Share on:
টাইপ-১ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস একবার হলে চিকিৎসা করেও নিরাময় সম্ভব নয়। তবে চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। একবার শরীরে ডায়াবেটিস এসে গেলে সারা জীবন সেটি বহন করতে হয়।
বিশ্বে ৪২ কোটির বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। বাংলাদেশে এ সংখ্যা ৮০-৯০ লাখ। এদের বেশিরভাগই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আমরা যেসব রোগী দেখি, তাদের ৯৬ ভাগের বেশি টাইপ-২। আর দুই থেকে তিন ভাগ টাইপ-১।
যাদের মা-বাবা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, স্থূল, কায়িক শ্রম কম করে, বেশি খাবার গ্রহণ করে, তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে আগে থেকে সতর্ক হলে এসব মানুষ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারেন, যাকে বলেছি প্রি-ডায়াবেটিস বলে থাকি।
প্রি-ডায়াবেটিস যাতে না হয় সেজন্য ওজন নিয়ন্ত্রণের রাখতে হবে। খাবার ঠিক করতে হবে। বেশি বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। শারীরিক সক্রিয়তা বাড়াতে হবে। এসব মেনে চললে, ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। হলেও অনেক পরে হবে। ৫০/৬০ বছরে ডায়াবেটিস হওয়া আর ১৪-২০ বছর বয়সে ডায়াবেটিস হওয়া কখনো এক কথা নয়।
আমার কাছে সম্প্রতি ১২ বছরের এক রোগী আসে, পরীক্ষায় তার ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। মাঝখানে সে প্রি-ডায়াবেটিসের একটি স্টেজও পার করেছে কিন্তু তার মা-বাবা খেয়াল করেননি। আসলে কোনো নিয়ম-কানুন না মানার কারণে এত অল্প বয়সে ডায়াবেটিস হয়েছে।
করোনাকালে আমরা এমন ভয়াবহ অবস্থায় পড়েনি। মা-বাবা শিশুদের বাইরে যেতে দেন না, খেলাধুলা নেই, স্কুল-কলেজও বন্ধ। ফলে শিশুরা সব ঘরে বসে বসে অল্প বয়সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে।
শারীরিক সক্রিয়তা কমে যাওয়ায় অনেকের ডায়াবেটিস ডেভেলপ করছে। তবে আশার কথা হলো, টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য অসুখ। আমরা সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারলে এ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। আর একবার প্রতিরোধ করা গেলে সারা জীবন তা থাকবে।
উল্লেখ্য,ডায়াবেটিস হওয়ার পর চিকিৎসায় পুরোপুরি সুস্থ সম্ভব নয়। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং নিয়ন্ত্রণ না করলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।
এমআই