করতোয়ায় নৌকাডুবি : একজন নিখোঁজ থাকলেও উদ্ধার কাজ চলবে
Share on:
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ৬৮ জনের লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন চারজন। তবে একজন নিখোঁজ থাকলেও উদ্ধার অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায়।
গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট থেকে বদেশ্বরী ঘাটে মহালয়া দেখতে যাওয়ার পথে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় নৌকাটি। এ ঘটনায় ৩১ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ ও ২১ জন শিশুর লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে জেলার সদর উপজেলার ১ জন, বোদা উপজেলার ৪৫ জন, দেবীগঞ্জ উপজেলার ১৭ জন, আটোয়ারী উপজেলার ২ জন ও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৩ জন রয়েছে।
মৃতরা হলেন- হাশেম আলী (৭০), শ্যামলী রানী (১৪), লক্ষ্মী রানী (২৫), অমল চন্দ্র (৩৫), শোভা রানী (২৭), দীপঙ্কর (৩), প্রিয়ন্ত (২.৫), রুপালি রানী (৩৫), প্রমিলা রানী (৫৫), ধনবালা (৬০), সুনিতা রানী (৬০), ফাল্গুনী (৪৫), প্রমিলা দেবী, জ্যোতিশ চন্দ্র (৫৫), তারা রানী (২৫), সানেকা রানী (৬০), সফলতা রানী (৪০), বিলাশ চন্দ্র (৪৫), শ্যামলী রানী ওরফে শিমুলি (৩৫), উষশী (৮), তনুশ্রী (৫), শ্রেয়সী, প্রিয়ন্তী (৮), সনেকা রানী (৬০), ব্রজেন্দ্র নাথ (৫৫), ঝর্ণা রানী (৪৫), দীপ বাবু (১০), সুচিত্রা (২২), কবিতা রানী (৫০), বেজ্যে বালা (৫০), দিপশিখা রানী (১০), সুব্রত (২), জগদীশ (৩৫), যতি মিম্রয় (১৫), গেন্দা রানী, কনিকা রানী, সুমিত্রা রানী, আদুরী (৫০), পুষ্পা রানী, প্রতিমা রানী (৫০), সূর্যনাথ বর্মন (১২), হরিকেশর বর্মন (৪৫), নিখিল চন্দ্র (৬০), সুশীল চন্দ্র (৬৫), যুথি রানী (০১), রাজমোহন অধিকারী (৬৫), রুপালী রানী (৩৮), প্রদীপ রায় (৩০), পারুল রানী (৩২), প্রতিমা (৩৯), সনেকা (৫৭), হরিকিশোর (৪৫), শিল্টু বর্মন (২৮), মহেন চন্দ্র (৩০), ভূমিকা রায় পূজা (১৫), আখি রাণী (১৬), সুমি রানী (৩৪), পলাশ চন্দ্র বর্মন (১৭), ধৃতি রানী (১০), সজিব রায় (৮), পুতুল (১৫), কবিতা (১১), যত্না রানী (৪০), মলিন্দ্র নাথ বর্মন (৫৬), মনিভূষণ বর্মণ (৪৬), মুনিকা (৩৮) ও দোলা রানী (০৫)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপর পাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রোববার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মালম্বীরা নৌকাযোগে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৫০-৬০ জনের ধারণক্ষমতার নৌকাটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতরে তীরে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়। মনে করা হচ্ছে, স্রোতের কারণে অনেক মরদেহ পানিতে ভেসে যেতে পারে। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর রায় গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের উদ্ধার কাজ বন্ধ নেই। রাতেও আমাদের লোকজন সেখানে আছে। একজন মানুষ নিখোঁজ থাকলেও আমাদের উদ্ধার কাজ অব্যাহত থাকবে।
তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে তিনি বলেন, তদন্তের তিন কার্য দিবস শেষ হয়েছে। প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আর ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের মাঝে আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে। আর আহতদের চিকিৎসা খরচ বহন করা হচ্ছে।
এমআই