tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ১১ অগাস্ট ২০২৩, ২০:৩৬ পিএম

নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করুন: মান্না


৫

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আওয়ামী লীগ বলে দেশের ৭০ ভাগ জনগণের নাকি সমর্থন রয়েছে এ সরকারের ওপর। তাহলে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুন জনগণের কাছে আপনাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে সরকারকে বিদায় নিতে নির্বাচনের মাঠে প্রতিযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।


শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ কর্তৃক আয়োজিত অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের দাবিতে গণমিছিলে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত ২৯ তারিখে সরকার গুন্ডামি করেছে। নিরীহভাবে আমরা রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের গুন্ডাপান্ডারা লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর কি বেদম মারধর করেছে তা আপনারা সবাই দেখেছেন। আমাদের নেতাকর্মীদের জেলের মধ্যে আটকে রেখে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।

খালেদা জিয়াকে সরকার জোর করে বন্দি করে রেখেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি ভুয়া মামলায় সরকার খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। ২০ বছরের সাজা দিয়েছে। অথচ সরকারের পেয়ারের লোক এস আলম গ্রুপ এক মিলিয়ন ডলার বিদেশে বিনিয়োগ করেছে। এতো টাকা তারা কোথায় পেল কোনো জবাব নেই। যদি ২ কোটি টাকার জন্য খালেদা জিয়ার বিশ বছর সাজা হতে পারে। তাহলে এক মিলিয়ন ডলারের জন্য এস আলম গ্রুপের কতো বছরে সাজা হবে?

সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য সংবিধানের দোহাই দিচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার বারবার সংবিধানের কথা বলছে। সংবিধান কি কোরআনের আয়াত যে বদলানো যাবে না? সরকার তো কতবার সংবিধান সংশোধন করেছে, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে কত আইন যুক্ত হয়েছে তাতে কি সংবিধান থাকে নাই? এই সংশোধনের মাধ্যমে সংসদ আদালত থেকে জোর করে আইন পাস করিয়ে নিয়েছে। সরকার আমাদের নেতাকর্মী এবং তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সাজা দিয়ে আন্দোলন দমাতে পারেনি।

গণতন্ত্র মঞ্চের এ নেতা বলেন, বিজয়ের যে গণমিছিল শুরু হয়েছে তাতে সরকার যতই নির্যাতন করুক না কেন আমাদের আন্দোলন থামাতে পারবে না। সরকার বারবার বলছে তারা অতীতের মতো ভালো ভোট দেবে। আমরাও বলে দিতে চাই, অতীতের মতো ভালো ভোট দিলে সরকার অতীত হয়ে যাবে। তোমাকে ক্ষমতায় থাকতে দেবো না।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেছেন যারা দুর্নীতি করে বিদেশে টাকা জমিয়েছে প্রমাণ পেলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। নাম প্রকাশ করা হয়নি, কিন্তু আমেরিকা যাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছে তাদের কি রক্ষা করতে পেরেছে শেখ হাসিনা? জনগণের এখন একটাই দাবি সরকারের পতন, সরকার কবে বিদায় নেবে। এ সময় সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা (জনগণ) রাজপথে থাকবেন, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।

বক্তব্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের একটা প্রতিনিধি দল দিল্লিতে গিয়েছিলেন। তারা কেন গিয়েছিলেন? আগামী নির্বাচন নিয়ে দেনদরবার করতে। গতকাল তারা একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন নির্বাচন নিয়ে ভারত সরকার কিছু বলেনি। বলেছে সংবিধান মতেই নির্বাচন করেন। বলেছে তারা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা দেখতে চায়। সরকার যদি সংবিধান মতো হাঁটে তাহলে জাতীয় সংসদে সরকারের যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তারা চাইলেই যেকোন সময় নতুন সংসদ ডেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিধান যুক্ত করতে পারে। সরকারের যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তাহলে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নাই। নতুন সংসদ ডেকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তারা চালু করতে পারে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে আগুন নিয়ে খেলছে, তাতে যদি আগামী ২৩-২৪ সালে আবার জোর জবরদস্তি করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করে তাহলে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। যদি আপনারা সত্যি সত্যি বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা দেখতে চান তাহলে আজকে বিরোধীদলের যে দাবি, সে দাবি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গ্রহণ করেছে। দ্রুত সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে, পার্লামেন্ট বাতিল করতে হবে এবং একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই কেবল দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হতে পারে।

সাইফুল হক বলেন, যুবলীগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। তাদের অন্যতম দাবি হচ্ছে বিএনপির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন তাদের দাবির সঙ্গে তারা একমত। আমি বলতে চাই, আপনার কত বড় ঔদ্ধত্য দেশের প্রধান বিরোধীদল যারা দেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়ছে, ভোটাধিকারের জন্য লড়ছে তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা বলছেন। আমি আজকে বলতে চাই আওয়ামী লীগ, আপনারা যে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছেন; কোন আদালতে আপনাদের বিচার হবে ?

তিনি বলেন, জনগণতো অনেক আগের আপনাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আওয়ামী লীগেরতো রাজনৈতিক মৃত্যু অনেক আগেই হয়েছে। ৭২ সালে একরাব মৃত্যু হয়েছে, ৭৫ সালে যখন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল তখন দ্বিতীয় মৃত্যু হয়েছে। যখন ১৮ সালে চুরি করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে তখন তাদের তৃতীয় মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বলতে চাই সোজা পথে হাঁটেন। আপনারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে বানালেন সাইবার নিরাপত্তা আইন। এটা সাইবার নিরাপত্তা আইন না এটা হচ্ছে সরকারের নিরাপত্তা আইন। যত আইন বলেন, এটা হচ্ছে একটা নিবর্তনমূলক আইন, দমনমূলক আইন, বিরোধীদলের কণ্ঠ রোধ করার আইন। এই আইন দিয়ে কি সরকার শেষ রক্ষা করতে পারবে?

এমআই