tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:২৪ পিএম

আলোচনা সভা থেকে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে জামায়াতের নিন্দা


অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যাকাতের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা থেকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিনসহ ১৪ নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।


শনিবার (৮ এপ্রিল) দেয়া ওই বিবৃতিতে গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার (৭ এপ্রিল) ঢাকা মহানগরী উত্তরের বসুন্ধরা থানার উদ্যোগে ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যাকাতের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও বিশিষ্টজনদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিল থেকে সেলিম উদ্দিনসহ ১৪ জন বিশিষ্ট ধর্মপ্রাণ নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। পরে শনিবার (৮ এপ্রিল) মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে সেলিম উদ্দিনের পাঁচ দিন এবং বাকিদের দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও রিমান্ড মঞ্জুর চরম অন্যায়, অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং মৌলিক মানাবাধিকার, ধর্মীয় অধিকার ও সংবিধানের পরিপন্থী। আমরা এই অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। একইসাথে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রিমান্ড বাতিল করার দাবি জানাই।’

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসলামের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো যাকাত। ধর্মপ্রাণ ও বিত্তশালী মুসলমানদের যাকাত আদায়ে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন প্রতিবছরই রমজান মাসে আলোচনা সভা, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানী ঢাকার ভাটারা থানায় এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল।

সচেতন দেশবাসী মনে করে, যাকাতের মতো নিছক একটি ধর্মীয় আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল থেকে ধর্মপ্রাণ বিশিষ্ট নাগরিকদের গ্রেফতার করে জালেম সরকার গর্হিত কাজ করেছে এবং ইতিহাসের নিকৃষ্টতম নজির স্থাপন করেছে। সরকার পবিত্র রমজান মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রোজাদারদের গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে। রোজার মাসে মানুষ যখন সিয়াম সাধনা ও আত্মশুদ্ধির কাজে ব্যস্ত, ঠিক তখন সরকারের এই গ্রেফতার চরম জুলুম ছাড়া আর কিছুই নয়। সরকার মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের ইসলামবিরোধী মনোভাব নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে। বর্তমান জালেম সরকার মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের দিন ঘনিয়ে এসেছে। তাই সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করছে। বর্তমান জালেম সরকারের কাছে দেশের কোনো মানুষই নিরাপদ নয়। গুম, খুন, হয়রানি ও গ্রেফতার যেন সরকারের রুটিনওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। দেশকে আজ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশবাসী মনে করে, গ্রেফতার করে এবং হামলা-মামলা দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন দমন করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানস্বীকৃত ধর্মীয় স্বাধীনতা, মৌলিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্র হরণকারী জালেম সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একইসাথে জুলুম-নিপীড়ন বন্ধ করে সেলিম উদ্দিনসহ ১৪ জন বিশিষ্ট ধর্মপ্রাণ নাগরিককে এবং সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর গ্রেফতার সকল নেতাকর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

এমআই