কবে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’? এ নামের অর্থ কী?
Share on:
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছে যা পরিণত হতে পারে নিম্নচাপে। আর সেখান থেকে পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। বুধবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
লঘুচাপটি থেকে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে, এর নাম হবে ‘রেমাল’।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দক্ষিণ–পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং এর কাছাকাছি এলাকায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। যেটি আজ বা আগামীকাল সকালের মধ্যেই সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হতে পারে এবং আগামী শুক্র বা শনিবারের মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
তবে নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা থাকলেও এখনই তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় কোথায় আঘাত হানতে পারে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না এখনই, নিম্নচাপ হওয়ার পর বলা যাবে কোনদিকে যাবে।
এর আগে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টের (ইসিএমডব্লিউএফ) এক ঘোষণায় জানায়, বুধবার বা বৃহস্পতিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণে সুন্দরবনের কাছে ২৬ থেকে ২৭ মে আঘাত হানতে পারে। তবে ঘোষণায় এ কথাও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকৃতি সব সময় ঠিক থাকে না। এর গতিপথ এবং গতি পরিবর্তিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ
লঘুচাপটি থেকে যদি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, তবে এর নাম হবে রেমাল। এই নাম ওমানের দেওয়া।
একটা সময় ছিল যখন ঘূর্ণিঝড়ের কোনো নাম থাকত না। অতীতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে আঘাত হানা শক্তিশালী অনেক ঘূর্ণিঝড়েরও কোনো নাম নেই।
আর তাই ২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও )। পাঁচটি বিশেষ আঞ্চলিক আবহাওয়া সংস্থার (আরএসএমসি) সাথে সমন্বয় করে এ কাজ করে থাকে ডব্লিউএমও। আরএসএমসি তার সদস্যদেশগুলোর কাছ থেকে নামের তালিকা চেয়ে থাকে। তালিকা পেলে দীর্ঘ সময় যাচাই-বাছাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে ডব্লিউএমওর কাছে পাঠায়।
বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা অনুমোদন করে আঞ্চলিক কমিটির একটি প্যানেল। তার নাম ডব্লিউএমও/এসকাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস। এর মধ্যে আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০১৮ সালের আরএমএসসি নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা করে। এ সময় ১৩টি দেশ ১৩টি করে নাম দেয়।
নামকরণের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মেনে চলা হয়। যেমন রাজনীতি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি বা লিঙ্গনিরপেক্ষ হতে হবে নামগুলোকে। মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে, রূঢ় এমন নাম দেওয়া যাবে না। নাম হতে হবে সংক্ষিপ্ত ও সহজে উচ্চারণ করা যায় এমন। সর্বোচ্চ আটটি বর্ণ থাকতে হবে ওই নামে। নাম দেওয়ার পাশাপাশি এখানে উচ্চারণও দিয়ে দিতে হবে।
সদস্যদেশগুলোর দেওয়া প্রস্তাবিত নাম সময়ে সময়ে সংশোধন করা যাবে।
রেমাল শব্দের অর্থ
ডব্লিউএমও/এসকাপ প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনসের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী নামের তালিকা হয়। যেমন ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী এই ১৩ দেশের মধ্যে সবচেয়ে আগে থাকে বাংলাদেশের নাম। আর শেষে থাকে ইয়েমেনের নাম। এবার ‘রেমাল’ শব্দটি ওমান থেকে নেওয়া হয়েছে। এরপরই আসবে পাকিস্তানের নাম।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, রেমাল একটি আরবি শব্দ। এই নামের অর্থ ‘বালু’।
এনএইচ