চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে রুশ সেনাদের মৃত্যুহার সর্বোচ্চ : বিবিসি
Share on:
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত যে কোনো সময়ের তুলনায় চলতি মাসেই রুশ সেনাদের নিহতের হার সর্বোচ্চ।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রুশ সেনা নিহতের এই পরিসংখ্যানকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছে। সেনা নিহতের সংখ্যা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি।
ইউক্রেন এ মাসে প্রতিদিন ৮২৪ রুশ সেনা নিহতের যে তথ্য দিয়েছে, তা গত বছর জুন-জুলাইয়ে নিহত রুশ সেনা সংখ্যার চারগুণেরও বেশি। ওই সময় প্রতিদিন প্রায় ১৭২ রুশ সেনা নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিল ইউক্রেন।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি রুশ সেনা নিহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি কারণের কথা উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে আছে— প্রশিক্ষিত সেনা কর্মকর্তার অভাব, যুদ্ধের সম্মুখসারিতে রসদ এবং সমন্বয়ের অভাব।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়া বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যেই সেনা নিহতের সংখ্যা বাড়ার এ তথ্য এলো।
ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের (এনএসডিসি) সেক্রেটারি ওলেক্সি দানিলভ এও বলেছেন, রাশিয়া তাদের অভিযানে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের সেনারা খুবই শক্তিশালীভাবে আক্রমণ প্রতিহত করছে। তারা (রাশিয়া) যে হামলা পরিকল্পনা করেছিলেন, সেটি ধীরে ধীরে সংঘটিত হচ্ছে। তবে তারা যেমনটি ভেবেছিল তেমনটি হচ্ছে না।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের বিদায়ী প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভাস দিয়ে বলেছিলন, রাশিয়া প্রায় ২৪ ফেব্রুয়ারির দিকে নতুন করে আক্রমণ শানাতে পারে।
কিন্তু স্থানীয় কিছু রাজনীতিবিদ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের গভর্নরও এখন বলছেন— আক্রমণ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ইউক্রেনের পূর্বে বাখমুত নগরী ঘিরে তুমুল লড়াই হচ্ছে।
রোববার রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা দল ওয়াগনার বলেছে, তারা যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই নগরীর একটি বসতি দখল করেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত এক লাখ ৩৭ হাজার ৭৮০ রুশ সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর। তবে ইউক্রেন বাহিনীতেও প্রচুর সেনা মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী নিত্য পণ্যের দাম বেড়ে যায় যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই পাল্টে যেতে শুরু করে জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনীতির চেহারা।
নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে রাশিয়া থেকে জ্বালানি, ভোজ্য তেল, গ্যাস ও কয়লাসহ খাদ্যশস্যের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি। প্রায় এগারো মাসের বেশি সময় ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ।
এন