tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৫১ এএম

১৭ জিম্মি মুক্তি দিল হামাস, ছাড়া পেল ৩৯ ফিলিস্তিনি


01001

১৩ ইসরায়েলিসহ মোট ১৭ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। মুক্তি পাওয়া অন্য চার জিম্মি থাইল্যান্ডের নাগরিক। বিপরীতে ৩৯ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। চার দিনের চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় দ্বিতীয় দিনে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।


কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরা বলেছে, দ্বিতীয় দফার জিম্মি মুক্তিতে গত শনিবার দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করেছে দাবি করে বেশ কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে জিম্মিদের মুক্তি দেয় হামাস। কারণ হামাসের শর্ত ছিল, গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েল যতক্ষণ পর্যন্ত ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বন্দীদের মুক্তি দেবে না তারা।

এরপর কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এই অনিশ্চয়তা কেটে যায়। ১৩ ইসরায়েলি এবং চারজন থাই নাগরিককে সাত ঘণ্টা বিলম্বের পর শনিবার গভীর রাতে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রসের (আইসিআরসি) কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস।

গাজা ছেড়ে যাওয়ার পর রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের মিসরের অংশে মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি ও থাই নাগরিকদের দেখা গেছে টেলিভিশন ফুটেজে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, ১৩ জন ইসরায়েলির মধ্যে ছয়জন নারী এবং সাতজন শিশু ও কিশোর। তাদের এরপর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুক্তি পাওয়া ১৭ জনই ইসরায়েলে পৌঁছেছে। থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন নিশ্চিত করেছেন যে, হামাসের মুক্তি দেওয়া সর্বশেষ জিম্মিদের মধ্যে চারজন থাই নাগরিকই সুস্থ আছেন। শনিবার এক্স-এ একটি পোস্টে স্রেথা বলেন, ‘সবাই সুস্থ আছে। কারোরই জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। সবাই স্বাভাবিকভাবে কথা বলছে, হাঁটাচলা করছে। মুক্তি পেয়ে সবাই খুশি।’

গণহত্যার প্রতিবাদ করায় স্পেনের সঙ্গে বিবাদে জড়াল ইসরায়েলগণহত্যার প্রতিবাদ করায় স্পেনের সঙ্গে বিবাদে জড়াল ইসরায়েল

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা মূল্যায়নের পর তারা আইডিএফ সৈন্যদের সঙ্গে থাকবে এবং পরে তাদের ইসরায়েলি হাসপাতালে নেওয়া হবে। সেখানে তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবে।

বিপরীতে, ইসরায়েলের দুটি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনের সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, এর মধ্যে ছয়জন নারী এবং ৩৩ জন শিশু। তাদের বরণ করে নিতে শনিবার বিকেল থেকেই পশ্চিম তীরে জড়ো হতে থাকে ফিলিস্তিনিরা। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে রামাল্লায় অপেক্ষমাণ পরিজনের কাছে তারা পৌঁছালে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন মুহূর্ত।

২০১৫ সালে ইসরায়েলি চেকপোস্টে আটক হওয়া ফিলিস্তিনি নারী ইসরা জাবিস আট বছর পর মুক্তি পেয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ব্যথা ও সংগ্রামের চিত্র সহজেই চোখে পড়ছে। এ নিয়ে আর কথা বলতে চাই না।’ যেসব ফিলিস্তিনি নারী এখনো ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী, তাদের ব্যাপারে উদ্বিগ্নতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ছোট ছোট মেয়েদের কথা বলছি। তারা এমন অনেক কিছুর মধ্য দিয়েই যাচ্ছে, যা কারও দেখা উচিত না।’

মূলত কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে গত শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে সেই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। গাজায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি এবং ১৫০ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে মুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রথম দফায় ২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিপরীতে ইসরায়েলও ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজা অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযান চালাতে থাকে। গাজার হামাস সরকারের তথ্যানুযায়ী, অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় ১৪ হাজার ৮০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে। ইসরায়েলে হামাসের হামলায়ও মারা যায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি।

এনএইচ