অর্জিত বিজয় সংরক্ষণে ইসলামী সমাজব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই : আ ন ম শামসুল ইসলাম
Share on:
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, দীর্ঘ ১৫ বছর পর দেশ ও জাতি ফ্যাসীবাদ ও বাকশাল মুক্ত হয়েছে। কিন্তু মাফিয়াতান্ত্রিক ষড়যন্ত্র এখনো বন্ধ হয়নি। তাই অর্জিত বিজয়কে সংহত করতে শ্রমিক-জনতা ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।
তিনি দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দলমত নিবিশেষে সকলকে যেকোন ত্যাগ স্বীকাওে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
শনিবার ( ৬ সেপ্টেম্বর ) সকালে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অর্জিত বিজয় সংরক্ষণ ও নতুন বাংলাদেশ পূনর্গঠনে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, দেশ ও জাতির জন্য শ্রমিক সমাজ অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন। দেশ ও জাতির যেকোন ক্রান্তিকালে শ্রমিক সমাজ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছে। আমাদের প্রান্তিক শ্রমিক গোষ্ঠীর হাত ধরেই আমাদের বাড়ি-গাড়ি গড়ে উঠেছে। কিন্তু তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলার মতো কেউ নেই। মূলত, সবচেয়ে বেশী বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের শ্রমিক গোষ্ঠী। মালিক শ্রেণি শ্রমনীতি মেনে চলার ক্ষেত্রে খুবই উদাসীন। আট ঘন্টার বেশী কাজ করিয়ে নিলেও কোন অভারটাইম ভাতা দেওয়া হয় না। যা খুুবই অমানবিক। তিনি শ্রমিক নিয়োগ পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, শ্রমিকদের কোন নিয়োগপত্র দেওয়া হয় না। ফলে যে কোন সময় একটি মৌখিক নোটিশেই চাকুরী থেকে বিদায় দিয়ে দিচ্ছে। তাই এই অশুভবৃত্ত থেকে আমাদেরকে অবশ্যই বেড়িয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, মূলত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ইসলামী শ্রমনীতি অনুসরণ না করার জন্য তারা আজ অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেক ত্যাগ ও কোরবানীর বিনিময়ে আমরা যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তা একমাত্র ইসলামিক আইন এবং শ্রমনীতি অনুসরণের মাধ্যমে আগামীতে অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে। আমাদের অর্জিত বিজয় ধ্বংস করার জন্য একটি দেশ এবং রাষ্ট্রবিরোধী চক্র উঠে পরে লেগেছে। তাই এই বিজয়কে ধরে রাখতে আমাদেরকে ময়দানে অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, এই বিপ্লব শত বছরের ইতিহাসের আরেকটি সেরা বিপ্লব। তাই বিজয় ঠেকাতে হত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। শেখ হাসিনার শাসনামলে ভাইয়ে-ভাইয়ে বিভেদ তৈরী করেছে। জাতিকে করা হয়েছে বহুধাবিভক্ত। আর এই ঐতিহাসিক বিজয়ের মাধ্যমে দলমত নির্বিশেষে আমাদের মধ্যে এক নতুন সেতুবন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমাদেরকে এই বিজয় ধরে রাখতে হবে। দেশ থেকে স্বৈরাচারের জঞ্জালমুক্ত করতে নতুন সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে। তাহলেই দেশে জন প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাফল্য আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে। আমরা শ্রমিকদের কষ্টের বিনিময়ে দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করছি। মানবরচিত আইন বাদ দিয়ে কুরআনের বিধান অনুযায়ি আইন তৈরি করতে হবে। আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের সকল স্তরে জাস্টিস প্রতিষ্ঠা। তিনি আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারী সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং স্বজনদের জন্য গভীর সমবেদনা জানান।
ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মাওলানা মহিববুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশীদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসা, শ্রমিক কল্যাণে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ইয়াছিন আরাফাত।
আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন ও মো. আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান, অফিস সম্পাদক মো. নূরুল আমিন, মহানগরীর সহ-সভাপতিমো. মিজানুল হক, গাজী মাহবুবুল আলম ও মো. হাসান ইমাম, সহ- সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান পান্না, হোসাইন আহমদ, মো. আব্দুল হালিম, ডা. সুলতান মাহমুদ সহ বিভিন্ন দল, ফেডারেশন ও ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
প্রেসবিজ্ঞপ্তি//এমএইচ