tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৫:৫০ পিএম

তিস্তার স্রোতে জলপাইগুড়িতে ভেসে আসছে মরদেহ


west-bengaal-flood

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে প্রবল বর্ষণের কারণে লোনাক হ্রদ উপচেপড়ায় ওই অঞ্চলে বিপর্যয়কর বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।


সিকিমের বন্যার কারণে তিস্তার পানির স্তর বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর প্রভাবে ইতিমধ্যে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ ও প্রতিবেশী বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর মাঝেই পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় তিস্তার ঘোলা পানির ঘূর্ণিতে ভেসে আসছে মরদেহ, জুতো, জামাকাপড়, বাসনপত্র, গবাদি পশু থেকে রান্নার গ্যাসের আধভর্তি সিলিন্ডার।

বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিস্তা নদী ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। ভোর হওয়ার আগেই সিকিমে হড়পা বান আসে। হুড়হুড় করে পানি গড়াতে থাকে তিস্তার খাত ধরে। সিকিমে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির পর সমতলে তিস্তার দু’ধারে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে সেবক থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত সমতলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তবে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন বলেছে, কোথায় ঠিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পানি কমার পর স্পষ্ট হবে। গজলডোবা ব্যারাজেরও ক্ষতি হয়েছে। প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যারাজের মেরামত কাজ শুরু হবে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের সেচমন্ত্রী এবং সেচসচিব বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরবঙ্গ পরিদর্শন করেবেন।

আনন্দবাজার লিখেছে, বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ির সেবকের রেলসেতুর মাত্র ৪ ফুট নিচ দিয়ে তিস্তার পানি বয়ে যেতে দেখা গেছে। পরে এই পথে রেল চলাচলের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তা রেল সেতুর কাছেও পানি বেড়ে গেছে। সেই সেতুর ওপর দিয়ে আসাম এবং দিল্লিগামী দু’টি রাজধানীসহ অন্য ট্রেন চালানো হয়েছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলা ছাড়া রাজ্যের অন্যান্য এলাকায় তিস্তার দু’পার থেকে অন্তত পাঁচ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন। লোকজনকে নিরাপদ রাখতে ২৮টি ত্রাণশিবির চালু করা হয়েছে।

জলপাইগুড়ির গজলডোবা এলাকা থেকে এক নারীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। এসব মরদেহ সিকিম বা রাজ্যের পাহাড়ি এলাকা থেকে ভেসে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যার পর তিস্তায় ভেসে আসা আরও একটি মরদেহ জলপাইগুড়িতে মিলেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন।

জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর চারটি দল শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি জেলায় উদ্ধারকাজের জন্য পৌঁছেছে। এছাড়া রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীরও সাতটি দল প্রাকৃতিক এই ‍দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে গজলডোবা ব্যারাজের ৪৫টি গেটের সবগুলোই খুলে দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য সেচ দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ভোর থেকে হঠাৎ পানির তোড় এমন বেড়ে গেছে যে, গেট না খুলে দেওয়া হলে পুরো ব্যারাজই ভেসে যেত। ইতিমধ্যে পানির তোড়ে ক্ষতি হয়েছে জলপাইগুড়ি লাগোয়া তিস্তা বাঁধ ও স্পারের।

এমবি