সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছি, অপেক্ষা চূড়ান্ত বিজয়ের: ফখরুল
Share on:
দেশের রাজনীতি এখন চরম সঙ্কটে আছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে আমরা এখন সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছি। তবে দেশের রাজনৈতিক চিন্তার মানুষ (ডান-বাম) সবাইকে আমরা এক করতে পেরেছি। এখন শুধু চূড়ান্ত বিজয়ের অপেক্ষা।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের অনেক সমস্যা আছে। আজকে যারা ক্ষমতাসীন তারা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট। আর ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তির লড়াইটা খুব সহজ নয়। এখানে মৌলিক পার্থক্য হলো- অস্ত্র-শস্ত্র, রাষ্ট্র ক্ষমতা সবকিছুকে নিয়ে সে আক্রমণ করে। আর আমরা জনগণকে নিয়ে সেই আক্রমণ প্রতিহতের চেষ্টা করি। এখানে আমি মনে করি আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো দেশের সমগ্র মানুষকে এক করতে পেরেছি। দেশের রাজনৈতিক চিন্তার মানুষ (ডান-বাম) সবাইকে আমরা এক করতে পেরেছি। এখন শুধু চূড়ান্ত বিজয়ের অপেক্ষা।
তিনি বলেন, আজ দেশের রাজনীতি চরম সঙ্কটে আছে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে আমরা এখন সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছি। এই সঙ্কট ও শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশের মানুষ ও দল এবং আমরা যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শের রাজনীতি করি তারা মোকাবিলা করছি। এসব মোকাবিলা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু দেশে নয়, বাইরের যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তারাও কিন্তু আমাদের চাওয়ার ব্যাপারে একমত। এটা নিঃসন্দেহে আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে অর্জন করতে পেরেছি। এখন প্রয়োজন যারা দলের বাইরে থেকে কাজ করেন তারা এই বোধটাকে সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে চেষ্টা করবেন। তবে আমরা আশাবাদী। প্রতিদিনই আমাদের সমর্থক বাড়ছে। আগে কর্মসূচি করতে গেলে কর্মীদেরকে বেশি সক্রিয় হতে হতো। এখন কিন্তু সাধারণ মানুষ আগে আসছেন। আমি মনে করি যেসব নেতাকর্মী তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তার অবদান বৃথা যাবে না।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, জেডআরএফ ২৪ বছর ধরে যেসব কাজ করেছে সেগুলো সামনে আনতে হবে। এটার নেতৃত্বে রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে কৃষকের মধ্যে উন্নতমানের বীজ, গবাদিপশু বিতরণসহ নানা সামাজিক কার্যক্রম করেছেন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে প্রাধান্য দিয়ে কার্যক্রম করা উচিৎ। যদিও বিগত সময়ে দেশের দুঃখ দুর্দশায় বিশেষ করে করোনা ভাইরাস, বন্যা দুর্গত মানুষের মধ্যে অসাধারণ সেবামূলক কর্মকাণ্ড করেছে। সম্প্রতি জেডআরএফ ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করেছে। এটা নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী কাজ। এই ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলার মাধ্যমে মেধাবী ও ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা সবার সামনে উঠে আসছে। যা জর্জ ওয়াশিংটন ফাউন্ডেশন, লিঙ্কন ফাউন্ডেশন, স্বামী বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশন করে থাকে। তারা গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডও করে থাকে। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনকেও এধরনের কর্মকাণ্ডে বেশি উদ্যোগী হতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেডআরএফ নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী, ২০১৩ সালে গুমের শিকার দারুস সালাম থানা ছাত্রদল সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রাশেদের ছোট ছেলে রিমন রাশেদ, বংশাল থানা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মো. পারভেজের ছোট মেয়ে হৃদি, ২০১৮ সালে গুলিতে চোখ হারানো সিরাজগঞ্জ মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেরি বেগমসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে জেডআরএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- সম্মিলিতি পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, জেডআরএফ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. এএইচএস পারভেজ, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, ডা. এম এ সেলিম, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল, অধ্যাপক ড. ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার, অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক আতাউর রহমান, আমিরুল ইসলাম কাগজী প্রমুখ।
এমআই