ভারত থেকে ডিজেল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
Share on:
বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে ৫৪৫ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) দেশের চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে ও আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে।
২০২৩ সালের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর সভায় অনুমোদিত হয়েছে। বিপিসি ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ের জন্য ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) থেকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে পাঠায়।
সূত্র হতে জানা যায়, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এনআরএল-এর শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (আইবিপিএল)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপোতে ডিজেল আমদানির বিষয়ে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল তারিখে বিপিসি ও এনআরএল এর মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়।
পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে বিপিসি ও এনআরএল এর মধ্যে ১৫ বছরের জন্য ফিক্সড প্রিমিয়াম (৫.৫০/বিবিএল) এ সেলস অ্যান্ড পারচেজ বিবেচনা করে পাইপ লাইন নির্মানের আগে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে এনআরএল থেকে রেল ওয়াগানের মাধ্যমে ২০১৬ সাল থেকে ডিজেল আমদানি করা হচ্ছে। ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর পাইপলাইন স্থাপন কাজের উদ্বোধন করা হয়।
সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের জন্য রেল ওয়াগনে ডিজেল সরবরাহ চলমান রাখার বিষয়ে আগ্রহ ব্যক্ত করেছে এনআরএল। বিদেশ থেকে আমদানি করা জ্বলানি তেল চট্টগ্রামস্থ প্রধান স্থাপনায় সংরক্ষণের পর দৌলতপুর ডিপো খুলনা হয়ে পার্বতীপুর ডিপো দিনাজপুরে পাঠাতে হয়।
ফলে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি ও অপারেশন লস (ট্রানজিট লস) বেশি হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে এনআরএল থেকে পার্বতীপুরে ডিজেল গ্রহণ করা হলে স্বল্প সময়ের মধ্যে ডিজেল প্রাপ্তি নিশ্চিত পরিবহন খরচ সাশ্রয় হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়াগন স্বল্পতার কারণে প্রধান স্থাপনা, চট্টগ্রাম, দৌলতপুর, খুলনা ডিপো থেকে পার্বতীপুর ডিপো বা উত্তরাঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী ডিজেল সরবরাহ করা সম্ভব হয় না।
কিন্তু এনআরএল থেকে আমদানি করা ডিজেল দিয়ে পার্বতীপুর ডিপো বা উত্তরাঞ্চলের চাহিদা পূরণসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ডিজেল সরবরাহে পরিবহন খরচ ও অপারেশন লস গ্রহণযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
সূত্র জানায়, আগের ধারাবাহিকতায় বিপিসি’র আমন্ত্রণ বিপিসি ও এনআরএল-এর মধ্যে ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর একটি ভার্চুয়াল নেগোশিয়েশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নির্ধারিত প্রিমিয়াম ৫.৫০ ডলার বা ব্যারেল হিসেবে ২০২৩ পঞ্জিকাবর্ষে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে এনআরএল ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল সরবরাহের বিষয়ে রাজি হয়।
আইবিএফপিএল পাইপলাইন চালু হলে এনআরএল পাইপলাইনের মাধ্যমে ৯০ হাজার মেট্রেক টন জ্বালানি তেল সরবরাহে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ের জন্য ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানিতে প্রিমিয়াম, রেফারেন্স মূল্য ও ইন্স্যুরেন্সসহ সর্বমোট আনুমানিক ৫১.০১০ মিলিয়ন ডলার হিসেবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৪৫ কোটি ৪ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে।
আমদানিতব্য ডিজেলের প্রকৃত মূল্য হবে বিল অব ল্যান্ডিং (বি/এল) তারিখে প্রকাশিত প্লাটস ভিত্তি ধরে ২ দিন আগে এবং ২ দিন পরে (২+১+২) অর্থাৎ ৫ দিনের গড় মূল্য। ৫ দিনের গড় হিসেবে জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য এমওপিএজি প্রাইস অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।
বিপিসি’র প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব বাজেট, জ্বালানি তেল বিক্রিলব্ধ অর্থ এবং অন্য উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে প্রস্তাবিত জ্বালানি তেল আমদানির অর্থায়ন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এন