সিরিয়ার পর ইরাকে মার্কিন বাহিনীকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা
Share on:
ইরাকে মার্কিন বাহিনীকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ইরাক থেকে সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে রকেট হামলার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে এই হামলা হলো।
অবশ্য এই হামলার জেরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনী ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে দুটি পৃথক রকেট এবং বিস্ফোরক ড্রোন হামলার মুখোমুখি হয়েছে বলে ইরাকি নিরাপত্তা সূত্র এবং মার্কিন কর্মকর্তারা সোমবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকে তথা গত প্রায় তিন মাসের মধ্যে এটিই মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম কোনও হামলা।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, পশ্চিম ইরাকি প্রদেশ আনবারে মার্কিন সেনাদের আবাসস্থল আইন আল-আসাদ বিমান ঘাঁটির কাছে দুটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ব্যাপক সতর্কতার কারণে ড্রোনগুলো শনাক্ত ও ভূপাতিত করা সম্ভব হয়।
এর আগে গত রোববার ইরাকের জুম্মার শহর থেকে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটির দিকে অন্তত পাঁচটি রকেট ছোড়া হয়। মার্কিন ও ইরাকি কর্মকর্তাদের মতে, গত রোববার উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার রুমালিনের একটি ঘাঁটিতে মার্কিন বাহিনীর অবস্থানের দিকে উত্তর ইরাক থেকে পাঁচটি রকেট ছোড়া হয়েছে।
হামলায় হতাহতের বা উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, রোববারের রকেট হামলাটি মার্কিন সেনাদের লক্ষ্যবস্তু করে চালানো হয়েছে। এটিকে গত ৪ ফেব্রুয়ারির পর থেকে ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে প্রথম হামলা বলে মনে হচ্ছে।
এর আগে গত শনিবার ভোরে ইরাকের একটি সামরিক ঘাঁটিতে বিশাল বিস্ফোরণে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর অন্তর্ভুক্ত ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হয়। এর একদিন পরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ইরাকে এবং ইরাক থেকে সিরিয়ায় এই হামলা এমন এক সময়ে হলো যখন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানী যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে একদিন আগেই ফিরে এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় তিনি হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন।
রয়টার্স বলছে, গত বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি মার্কিন বাহিনীর ওপর প্রায় প্রতিদিনই রকেট ও ড্রোন হামলা শুরু হয়। ইরাকে ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স নামে পরিচিত ইরান-সমর্থিত শিয়া মুসলিম সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি দল সেসময় এই হামলার দায় স্বীকার করে।
মূলত গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে মার্কিন সমর্থনের কথা উল্লেখ করে তারা এই হামলা চালায়।
ইরাকি-জর্ডান সীমান্তে একটি ছোট ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিনজন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার জেরে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের মারাত্মক প্রতিশোধমূলক বিমান হামলার পর ইরাকি কর্তৃপক্ষ এবং ইরানের চাপে জানুয়ারির শেষের দিকে এসব হামলা বন্ধ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ২০০৩ সালে ইরাকে আক্রমণ করে এবং দেশটির তৎকালীন শক্তিশালী নেতা সাদ্দাম হোসেনের পতন ঘটায়। এরপর ২০১১ সালে দেশটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়।
কিন্তু ২০১৪ সালে বাগদাদ সরকারের অনুরোধে ইসলামিক স্টেট বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করার জন্য দেশটিতে আবারও মার্কিন বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
বর্তমানে ইরাকে প্রায় ২৫০০ মার্কিন সৈন্য এবং পূর্ব সিরিয়ায় ৯০০ মার্কিন সৈন্য পরামর্শ ও সহায়তা মিশনে মোতায়েন রয়েছে।
এনএইচ