tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
অর্থনীতি প্রকাশনার সময়: ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:১৯ পিএম

পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর গাইডলাইন অনুমোদন


639

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে ১০ দফা সুপারিশসহ একটি গাইডলাইনে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়।


অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এই গাইডলাইন অনুসারে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট ১০টি দেশের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।

সুপারিশে বলা হয়েছে, বিদ্যমান আইন কাঠামোর আওতায় বিদেশে পাচারকৃত অর্থ বা সম্পদ উদ্ধারের জন্য দায়ের করা মামলাগুলোর হালনাগাদ ডাটাবেজ তৈরি।

পাচারকৃত অর্থ বা সম্পদের গন্তব্য দেশ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ডসহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড থেকে পারস্পরিক আইনি সহায়তা পাওয়ার জন্য কূটনৈতিক ব্যবস্থা জোরদার করা।

কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি আইনি সহায়তা পাওয়া সহজ করার জন্য গন্তব্য দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, আইনি সহায়তা চুক্তি মধ্যে কয়েকটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত থাকার প্রয়োজন বলে সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলো হল- তথ্যসংগ্রহ, সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ, জিজ্ঞাসাবাদ ও বক্তব্য গ্রহণ, নোটিশ ও আদেশ জারি, অর্থ জব্দ ও ক্রোক আদেশ বাস্তবায়ন, আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যৌথ তদন্ত, এক্সট্রাডিশন সম্পদ চিহ্নিত করা, অনুসন্ধান, সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও অপরাধলব্ধ সম্পদ পুনরুদ্ধার করা।

সূত্রটি আরও জানায়, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় গাইডলাইনটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পক্ষ থেকে এই গাইডলাইনটি তৈরি করা হয়েছে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একটি সূত্র জানায়, হাইকোর্ট থেকে চলতি বছরের গেল আগস্ট মাসে একটি রুলের শুনানিকালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রিট পিটিশনের রায়ের বিষয়ে উল্লেখ করে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশের করণীয় বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

গত অক্টোবর মাসে এর আলোকে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়েছে। এখন অনুমোদন করা গাইডলাইনটিও কোর্টে দাখিল করা হবে।

গাইডলাইনের সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে, পাচারকৃত অর্থ বা সম্পদ উদ্ধারের জন্য দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্ত বা বিচারিক প্রক্রিয়ায় সংঘটিত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা। পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে বিদ্যমান আন্তঃসংস্থা টাস্কফোর্স কর্তৃক জাতীয় সমন্বয় কমিটির কাছে কার্যক্রমের অগ্রগতি উপস্থাপন।

অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে গঠিত পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারবিষয়ক আন্তঃসংস্থা টাস্কফোর্সের মাধ্যমে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে দায়েরকৃত মামলাগুলোর বিচারিক প্রক্রিয়ায় বাধাগুলো অপসারণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ। টাস্কফোর্সে আইন ও বিচার বিভাগের একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।

সুপারিশে বলা হয়েছে, পারস্পরিক আইনি সহায়তা পাওয়া ও দেওয়া সহজ করার জন্য কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে এটি বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে বলা হয়েছে, অর্থসম্পদ পাচারে অনেক দেশ ট্যাক্স হেভেন এবং অফশোর জুরিশডিকশন রুট হিসেবে কাজ করে যাদের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক সীমিত। তাই এ সব দেশের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সুইসব্যাংকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য তথ্য আদান-প্রদানসহ একটি কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ কর্তৃক অনুসৃত কৌশল পর্যালোচনা করে বাংলাদেশের জন্য একটি কার্যকর কৌশলপত্র প্রণয়নের জন্য ২০১৯ সালে নভেম্বরে বিএফআইইউ প্রধান কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

এই কমিটির পক্ষ থেকে অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে এই গাইডলাইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এন