২০১৯ আর ২০২১ এর তিক্ত স্মৃতি কানপুরে ভুলতে পারবে বাংলাদেশ?
Share on:
বৃষ্টিবিঘ্নিত কানপুর টেস্ট। প্রথম তিন দিনে খেলা হলো মোটে ৩৫ ওভার। এমন এক টেস্ট থেকে ফলাফল আসবে– এমন বাজি ধরার কেউ হয়ত ছিল না টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন পর্যন্ত।
কিন্তু, লাঞ্চের পরপরই ব্যাট করতে নেমে ভারত রীতিমত চালিয়েছে তাণ্ডবলীলা। এক ইনিংসে গড়েছে নয় বিশ্বরেকর্ড। টেস্ট ইতিহাসের দ্রুততম ৫০, ১০০, ১৫০, ২০০ আর ২৫০ রানের রেকর্ড গড়েছে তারা।
শেষ পর্যন্ত ৫২ রান লিড রেখে চতুর্থ দিনেই বাংলাদেশকে আবার ব্যাট করতে পাঠিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দিনের খেলা বাকি ছিল ১১ ওভার। তার মাঝেই ২৬ রান তুলতে বাংলাদেশ হারিয়েছে ২ উইকেট। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ শিবিরে কিছুটা হারের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণও আছে। অতীত ইতিহাসটা যে বাংলাদেশকে সঙ্গ দিচ্ছে না কোনোভাবেই।
২০২১ সালের পাকিস্তান টেস্ট
২০২১ সালের ঢাকা টেস্ট। পাকিস্তানের বিপক্ষে বৃষ্টি বিঘ্নিত সেই টেস্টে মাত্র চার সেশনের মাঝেই দুইবার অলআউট হয় বাংলাদেশ। ফলাফল ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ হার। ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া সেই টেস্টে প্রথমদিন বৃষ্টি আসার আগে খেলা হয়েছিল ৫৬.২ ওভার। পাকিস্তানের সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান। দ্বিতীয় দিনে খেলা হয় মোটে ৬ ওভার। তৃতীয় দিনের খেলা পণ্ড হয় বৃষ্টিতে।
চতুর্থ দিনে ৩৫ ওভার ব্যাটিং করে দলীয় ৩০০ রানে ইনিংস ডিক্লেয়ার করেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। এরপরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দেখায় ভয়াবহ এক ব্যাটিং প্রদর্শনী। চতুর্থ দিনে ২৬ ওভার খেলে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ৭৬ রান। ৫ম দিনের বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৮৭ রানে। ফলো-অনে নেমে বাংলাদেশের সামনে ছিল ম্যাচ বাঁচানোর সুযোগ। কিন্তু সাজিদ খান, শাহিন আফ্রিদি আর হাসান আলী টাইগারদের গুটিয়ে দেন ২০৫ রানে। বৃষ্টিবিঘ্নিত টেস্ট বাংলাদেশ হেরে যায় ইনিংস ও ৮ রানের ব্যবধানে।
২০১৯ সালে আফগানিস্তান টেস্ট
চট্টগ্রামে একমাত্র টেস্ট। দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টি, তৃতীয় দিনে আলোকস্বল্পতায় বাঁধা পায় টেস্ট। চতুর্থ দিনের খেলাতেও ছিল বৃষ্টি। এমন বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে আফগানিস্তান প্রথম ইনিংসে পায় ১৩৭ রানের লিড। চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের সামনে ছিল ৩৯৮ রানের টার্গেট। দিনের খেলা শেষ যখন হয় তখন টাইগারদের স্কোর ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান।
বাংলাদেশ তবু ম্যাচ ড্রয়ের স্বপ্ন দেখেছিল ৫ম দিনে বৃষ্টির সুবাদে। খেলা শুরু হয়েছিল একেবারেই শেষ বিকেলে। ১৮ ওভার টিকে থাকাই ছিল লক্ষ্য। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে সেদিন ১৫ ওভারের মাঝে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২৪ রানের ব্যবধানে ম্যাচটা হেরে বসে বাংলাদেশ।
কানপুরে বাংলাদেশ আড়াই দিন বসে থেকেছে বৃষ্টি আর ভেজা মাঠের কারণে। কিন্তু চতুর্থ দিনে মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা আর ভারতের আগ্রাসী ব্যাটিং আরও একবার কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। ২০১৯ আর ২০২১ সালের দুই বৃষ্টিভেজা টেস্টের স্মৃতিটাও তাই আরও একবার হাজির হচ্ছে বাংলাদেশের সামনে।
এনএইচ