tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ১৮ অক্টোবর ২০২২, ১৬:৫৭ পিএম

যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে শান্তি ফিরে আসুক : প্রধানমন্ত্রী


resize

“বিশ্বকে শিশুদের জন্য সুন্দর ও বাসযোগ্য করতে যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে শান্তি ফিরে আসুক, এটাই প্রত্যাশা” বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী চাই। আমরা যুদ্ধ চাই না, ধ্বংসযজ্ঞ, অস্ত্র ব্যবসা, কোনো শিশুকে উদ্বাস্তুতে পরিণত করা এবং কাউকে গুলি করে হত্যা করা হোক, আমরা তা চাই না।’

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকালে বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ‘শেখ রাসেল দিবস-২০০২’-এর উদ্বোধনী এবং ‘শেখ রাসেল পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবন থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের এই আয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

আজকে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ (রাশিয়া-ইউক্রেন)। কত শিশু আজকে এতিম হয়ে যাচ্ছে, কত শিশু কষ্ট পাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, সেখানেও তো শিশুরা পরভূমে রিফিউজি হিসেবে মানুষ হচ্ছে।

শেখ হাসিনা নিজেরও রিফিউজি থাকার এবং বন্দী অবস্থায় নিদারুণ কষ্টে দিন কাটানোর অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে বলেন, ‘তাই আমরা যুদ্ধ চাই না, কোনো সংঘাত চাই না। আর রাসেলের মতো আর কোনো শিশুকে যেন জীবন দিতে না হয়। আমরা চাই প্রত্যেকের ভবিষ্যত সুন্দর হোক, উন্নত হোক।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫-এর পর দেশে ১৯টি ক্যু হয়েছে, আমাদের ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে হাজারো অফিসার-সৈনিক হত্যা করা হয়েছে, স্বজনরা তাদের লাশও পায়নি, গুম করে ফেলা হয়েছে।

আমাদের আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে, কারাভোগ করেছে, মৃত্যুবরণ করেছে, কাজেই আর আমরা এই স্বজন হারানোর বেদনা, কান্না শুনতে চাই না।

আমরা চাই প্রত্যেকের ভবিষ্যৎ সুন্দর হোক, উন্নত হোক। আমরা পাঁচ হাজার কম্পিউটার ল্যাব এবং ৩০০টি স্কুল অফ ফিউচার উদ্বোধন করলাম জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর আগে আরও ৮ হাজার করেছিলাম, প্রায় ১৩ হাজার ডিজিটাল ল্যাব করা হয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, সারা বাংলাদেশে আমাদের ছেলেমেয়েদের আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা দেয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা- এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। শিশুদের যে মেধা সে মেধা বিকাশের যেন সুযোগ হয়, শিক্ষা-দীক্ষায় তারা উন্নত হবে, প্রগতির সাথে এগিয়ে যাবে, প্রযুক্তি শিক্ষা নেবে, বিজ্ঞান শিক্ষা নেবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের শিশুরাই হবে আগামী দিনের কর্ণধার। আজকের শিশুরাই এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে। কোনো মানবাধিকার যেন লঙ্ঘন না হয়, কোনো শিশু যেন নির্যাতিত না হয়। প্রত্যেকেই যেন সুন্দর জীবন পায় সেটাই আমরা চাই। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কাজ আমরা করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা, লেখাপড়া, আধুনিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিক্ষা এবং বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলা, প্রতিনিয়ত যেসব প্রযুক্তির পরিবর্তন হচ্ছে সেসব পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলা- সেভাবেই বাংলাদেশ গড়ে উঠুক। বাংলাদেশের সকল শিশুর মেধা বিকাশের সুযোগ হোক।

‘আজকে রাসেল নেই, আমরা তো সবই হারিয়েছি, কিন্তু বাংলাদেশটা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যায়,’ যোগ করেন তিনি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সম্পাদিত ‘দুরন্ত প্রাণবন্ত শেখ রাসেল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী মেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রের ট্রেলারও অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ ও শিশু বক্তা আফসা জাফর সৃজিতা।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক বিজয়ীদের মধ্যে ‘শেখ রাসেল পদক-২০২২’ বিতরণ করেন।

শেখ রাসেল দিবস-২০২২ উপলক্ষে দেশব্যাপী কুইজ, ক্রীড়া, শিল্পকলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝেও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের উপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি এবং আইসিটি বিভাগ কর্তৃক নির্মিত শেখ রাসেল দিবস-২০২২ উপলক্ষে একটি থিম সং পরিবেশিত হয়। পরে শিশুদের পরিবেশনয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর সাথে ঘাতকরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত বছর থেকে শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। শেখ রাসেল জাতীয় দিবসের এবারের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক।’ সূত্র : বাসস।

এন