ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধ নিয়ে যা বললেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
Share on:
প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তার দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না; তবে ইসরায়েল যদি ফিলিস্তিন এবং লেবাননে সামরিক অভিযান বন্ধ না করে, তাহলে ভবিষ্যতে ইরান আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে।
দুই দিনের সরকারি সফরে কাতারে গিয়েছেন পেজেশকিয়ান। সেখানে গতকাল বুধবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠকের সময় এই ইস্যুতে ইরানের অবস্থান স্পষ্ট করেন তিনি।
বৈঠক শেষে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমার এই সফরের প্রধান উদ্দেশ্য দু’টি— প্রথমত, দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ ও বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে কাতারের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করা এবং দ্বিতীয়ত মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কাতারের আমিরের সঙ্গে মত বিনিময়।”
“মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আমি কাতারের আমিরের কাছে ইরানের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। আমি বলেছি যে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে নিরীহ বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। তারা যদি এই তৎপরতা থেকে সরে না আসে, তাহলে ভবিষ্যতে তাদেরকে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখী হতে হবে।”
প্রসঙ্গত, ইরান এবং ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের দুই চিরবৈরী দেশ। এই বৈরিতা আরও বৃদ্ধি পায় ২০২৩ সালে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় হামাস ও তার মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের যোদ্ধারা। এই হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধার করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ), যা এখনও চলছে।
বুধবার যারা হতাহত হয়েছেন, তাদের সংখ্যা হিসেবে ধরে এক বিবৃতিতে গাজার বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর গত প্রায় এক বছরের অভিযানে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪১ হাজার ৬৮৯ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৯৬ হাজার ৬২৫ জন।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর পর থেকে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে ইরানের সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র ইসলামিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। জবাব দিতে শুরু করে ইসরায়েলও। উভয়পক্ষের সংঘাতে এ পর্যন্ত কয়েক শ’ মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই হিজবুল্লাহর সদস্য এবং লেবাননের নাগরিক।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে হিজবুল্লার বিরুদ্ধে হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি করে ইসরায়েল। দেশটির বিমান বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহসহ গোষ্ঠীটির বেশ কয়েকজন কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার। এক কথায়, গত দু’সপ্তাহে হিজবুল্লাহর শীর্ষ চেইন অব কমান্ড ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েল।
প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলা চালানোর পর মঙ্গলবার ভোর থেকে সেখানে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের স্থল বাহিনী। ওই দিন রাতেই ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে মোট ১৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান।
সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড
এনএইচ