সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ নয়: খাদ্যমন্ত্রী
Share on:
বাংলাদেশের ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় মাঝে মাঝে সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতি কঠোর হয়। তাদের জেল-জরিমানা করে। কিন্তু সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ নয়, বরং বন্ধু বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
বাংলাদেশের ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় মাঝে মাঝে সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতি কঠোর হয়। তাদের জেল-জরিমানা করে। কিন্তু সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ নয়, বরং বন্ধু বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
গতকাল বুধবার ( ২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়নে সেক্টর লিডার ও সিইও কনফারেন্সে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অত্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়ায়করণ ও খাদ্য ব্যবসায় নিযুক্ত প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
খাদ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, এ দেশকে এগিয়ে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। দেশের এ উন্নয়নের হাতিয়ার আপনারা। এর মধ্যে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবসায়।
গার্মেন্টস ব্যবসার পরে রপ্তানির সবচেয়ে বড় খাত হতে পারে এটি। এ খাত কৃষি খাতকে সমৃদ্ধ করেছে। এ জন্য করোনার মধ্যে কৃষক নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হয়নি।
তিনি বলেন, আপনারা বিশ্ব মানের খাবার প্রস্তুত করুন। যেন বিদেশ থেকে খাবার না আনতে হয়। উল্টো আমরা বিশ্ব বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম এবং এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) চেয়ারম্যান আব্দুল কাইউম সরকার অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ।
অত্র অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেন, দেশের খাদ্যশিল্প এগিয়ে নিতে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বেঞ্চমার্ক করতে হবে।
ফুড ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্টের কোনো বিকল্প নেই। আমরা অনেক ভালো কাজ করছি। সরকারের সঠিক সহায়তা পেলে আরও ভালো করতে পারব।
সরকারের তিনটি সংস্থার সমন্বয়ের অভাবে ব্যবসায়ীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যারা খাবারের ব্যবসায়ী, তারা একই সঙ্গে বিএসটিআই, সিটি করপোরেশন ও বিএফএসএ- তিন সংস্থার রুলস-রেগুলেশনের সম্মুখীন হচ্ছি।
কিন্তু সবার সমন্বয় না থাকায় মাঝে মাঝে আমাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে। যেখানে আমরা নিজেরা ফুড সেফটি নিয়ে অনেক কাজ করি, তাদের জন্য এটি বিব্রতকর। আমরা একটি অথরিটির মধ্যে আসতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটের হাত থেকে রক্ষা করুন। তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিন। তারা যেন সঠিক বিচার করতে পারেন। আমরা রমজান মাস এলে আরও টেনশনে থাকি। কখন মামলা হয়, কখন ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যায়।
আমাদের এসব অত্যাচার থেকে বাঁচাতে হবে। জোর না করে গঠনমূলক নির্দেশনা দিন। সবাই একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে, তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে। খাদ্য নিরাপদ হবে।
এসিআই কনজিউমারের বিজনেস ডিরেক্টর ফারিয়া ইয়াসমিন অনুষ্ঠানে বলেন, ব্যবসায়ীদের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রচুর টেস্ট করতে হয়। রপ্তানির জন্যও লাগে।
কিন্তু আমাদের দেশে খাদ্য পরীক্ষায় এক্সিডিটেশন ল্যাব নাই। একটি ল্যাব প্রয়োজন। তাহলে বিদেশ থেকে আমাদের পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন হবে না।
বেঙ্গল মিটের সিইও এএফএম আসিফ বলেন, দেশের মিটবেজ খাবার সরবরাহ ও সংরক্ষণের জন্য সঠিক কোল্ড চেইন নেই। তাতে খাবারের মান নষ্ট হচ্ছে। মাঝে মাঝে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।
ফলে কোল্ড চেইন কিভাবে সহজলভ্য করা যায় সে বিষয়ে পলিসি লেভেলে সহায়তা দিন।
আকিজ গ্রুপের সিইও সৈয়দ আলমগীর বলেন, ব্যবসায়ীদের সহায়তা দেওয়ার মনোভাব দরকার। পাকড়াও নয়। বড় বড় কোম্পানিগুলো এ খাতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। তারা সব সময় সুনাম নিয়ে ব্যবসা করতে চায়।
এ সময় অত্র অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কয়ার ফুড, কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রি, সজিব গ্রুপ, নেসলে, কোকাকোলাসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও তাদের প্রতিনিধিরা।
এইচএন