বিরোধীদের জন্যও দোয়া থাকবে : ডা: শফিকুর রহমান
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, সমাজের কেবল নির্দিষ্ট মানুষের জন্য আমাদের দাওয়াত নয়। মনে রাখতে হবে আমাদের ওপরে সব মানুষের অধিকার ও হক রয়েছে। এই দাওয়াত পৌঁছে দেয়া মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আমানত।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, সমাজের কেবল নির্দিষ্ট মানুষের জন্য আমাদের দাওয়াত নয়। মনে রাখতে হবে আমাদের ওপরে সব মানুষের অধিকার ও হক রয়েছে। এই দাওয়াত পৌঁছে দেয়া মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আমানত।
সে লক্ষ্যে প্রতিটি থানা আমির ও সেক্রেটারিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। এমনকি সবসময় যারা আমাদের বিরোধিতা করছেন, আমরা তাদেরকে আমাদের বন্ধু ও ভাই-বোনের মতো মনে করি। তাদের হেদায়েতের জন্য আমরা মহান রবের কাছে দোয়া অব্যাহত রাখবো ইনশাআল্লাহ।
আজ শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে থানা সভাপতি ও সেক্রেটারিদের নিয়ে আয়োজিত দিনব্যাপী শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক এলাকা আখ্যায়িত করে বলেন, এ এলাকায় প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের বসবাস। এই অঞ্চলে বসবাসকারী প্রত্যেক মানুষের কাছে আমাদের ইসলামের সুমহান আদর্শের আহ্বান পৌঁছে দিতে হবে।
বক্তৃতায় ডা: শফিকুর রহমান আরো বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়ে আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের স্বপ্ন নিয়ে তার মঞ্জিলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
মক্কার কঠিন পরিস্থিতির সময়ে ইসলাম বিজয়ের জন্য আল্লাহর রাসূল সা: ব্যক্তির নাম ধরে ধরে তাদের হেদায়েতের জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছিলেন।
আমাদেরকেও সেভাবে দোয়া করতে হবে। আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন দায়িত্বশীল, আল্লাহর গোলামী করার জন্য আমরা আত্মনিবেদিত। এজন্য কুরআনের বিধানের আলোকে নিজেকে তৈরি করে দেশ, সমাজ ও জাতি গঠনে আমরা প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাব।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে একটি সফল ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন দেখে বলেও জানান জামায়াতের শীর্ষ নেতা। তিনি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক এলাকা মনে করেন। কেননা, দেশ পরিচালনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এখানে রয়েছে।
তিনি বলেন, সচিবালয়, জজকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে দেশের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ এলাকায় অবস্থিত। সেই গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মূল দায়িত্বশীল থানা আমির ও সেক্রেটারিরা আজ এখানে একত্রিত হয়েছেন।
আপনাদের মনে রাখতে হবে দেশের মূল প্রশাসনিক অঞ্চল বা এলাকা যখন আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়, তখন সারাদেশে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সফলতা চলে আসে। তাই সংগঠনের সে লক্ষ্য পূরণে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে কঠিনভাবে চাষাবাদ করতে হবে।
বর্তমানে দেশের এই ক্রান্তিকাল ও নাজুক পরিস্থিতিতে জনগণের অধিকার সুনিশ্চিত করতে মূল দায়িত্বশীলদেরকে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হবে এবং জনগণ তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রত্যেক দায়িত্বশীলকে নিজেদেরকে মানসম্পন্ন নেতৃত্ব দানকারী পরিণত করার মধ্য দিয়ে দুনিয়ার পরিবর্তন সাধন করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
একইসাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের যাবতীয় কর্মতৎপরতা ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রত্যেক এলাকায় ইউনিট প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মহল্লা কমিটিগুলোকে আরো সুসংগঠিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আল্লাহতায়ালা চাইলে চরম ও কঠিন অবস্থার পরে আমাদেরকে সহজ ও স্বাভাবিক পরিবেশ উপহার দিতে পারেন। সে প্রত্যাশা আমরা মহান আল্লাহর দরবারে কামনা করছি।
আগামী দিনে ইসলামী আন্দোলনের মূলক্ষেত্র হিসেবে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে প্রস্তুত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য সব থানা আমির ও সেক্রেটারিদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান নূরুল ইসলাম বুলবুল।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় দিনব্যাপী শিক্ষাশিবিরে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট ড. মো: হেলাল উদ্দিন ও মো: দেলাওয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, ফরিদ হোসাইন, মাওলানা ফরিদুল ইসলাম, অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, শামসুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইন, শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, অধ্যাপক নুরুন্নবী মানিক, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, জয়নাল আবেদিন, হাফিজুর রহমান, আবু আহনাফ, মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, শেখ শরিফ উদ্দিন আহমদসহ মহানগরীর বিভিন্ন থানার আমির-সেক্রেটারি ও বিভিন্ন পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি ও সেক্রেটারিরা। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
এইচএন