দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন জনগণ মেনে নিবে না : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান রংপুর জেলা জামায়াতের ভার্চুয়ালি কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে- আমরা আল্লাহর কাছ থেকে এসেছি এবং তাঁরই কাছে আমাদের ফিরে যেতে হবে।
তাই মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাঁরই পূর্ণাঙ্গ গোলামীর মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার চেষ্টা বিরামহীনভাবে চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের সকল কর্মীকে বাবা-মা, নিকট আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীসহ সকলের সুখে-দুখে কাছে থাকতে হবে, তাদের খোঁজ-খবর নিতে হবে এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে।
সেই সাথে সকল জনশক্তিকে সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে এবং ইয়াতিম, মিসকিন ও বিধবাদের কল্যাণসহ সামাজিক ও মানবিক কল্যাণে ব্যয় করার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে সংগঠনের প্রতিটি ইউনিটকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
শুক্রবার (২৬ মে) ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত আরো বলেন, শহীদি তামান্না যাদের আছে তাদের জেলের ভয় থাকা চলবে না। তাক্বদিরে যা লেখা আছে, তা হবেই। তাহলে ভয় কিসের? তিনি কর্মীদেরকে তিনটি কাজ করতে নির্দেশ দেন। ১. ব্যাপকভাবে সালামের প্রচলন ২. দরিদ্র প্রতিবেশী ও নিরন্ন মানুষকে খাবার পৌঁছে দেয়া এবং ৩. শেষ রাতে নফল এবাদতের মাধ্যমে অশ্রু ফেলে আল্লাহর কাছে দুআ করা।
প্রধান অতিথি বলেন, কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা জামায়াতের চিন্তার ফসল যা এখন গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সুতরাং এদেশে কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া কোনো নিবার্চন হবে না এবং দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন এ দেশের জনগণ মেনে নিবে না। এ দাবি আদায়ে আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আমীরে জামায়াত ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে জেলে রাখা হয়েছে। আমি জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সকল রাজবন্দির দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আমেরিকার ভিসা পলিসি এদেশের জন্য অপমানজনক, যা বর্তমান বিনা ভোটের জালেম সরকারের অপরাজনীতির ফসল। সুতরাং এ সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।
বিশেষ অতিথি মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জামায়াত কর্মীদেরকে মসজিদে সালাত আদায় ও সিয়াম পালনসহ ইসলামের সামগ্রিক বিধি-বিধানের অনুশীলনকারী হতে হবে। একজন সত্যিকার দাঈ ইলাল্লাহ হিসেবে আমাদেরকে সত্যের সাক্ষ্য দিতে হবে, সত্যের ওপর অটল থাকতে হবে এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতে হবে। এ বছর হলো আন্দোলন, সংগ্রাম ও নির্বাচনের বছর। সকল কর্মীকে শক্তি ও সামর্থানুযায়ী ময়দানে কাজ করতে হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের ঘোষিত প্রার্থীগণ সংগঠনের প্রতিনিধি-এটি মনে রেখে তাদেরকে বিজয়ী করার জন্য আমাদেরকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ রাজিবুর রহমান পলাশ বলেন, আল-হামদু লিল্লাহ, আমাদের সংগঠন সুসংগঠিত। এই সংগঠনকে গণমানুষের সংগঠনে পরিণত করার জন্য আমাদেরকে ব্যাপক পরিসরে দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে দ্বীনের পক্ষের সমর্থন বৃদ্ধি করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের পরিবার, আমাদের ভাই-বোন, আমাদের আত্মীয়-স্বজন ও আমাদের প্রতিবেশীদের মাঝে বেশি বেশি দাওয়াতি কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। আর এটি সম্ভব দাঈর উত্তম চরিত্র প্রতিফলনের মাধ্যমে।
বিশেষ অতিথি রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন বলেন, এখন থেকে সকল কর্মীর চিন্তা ও কর্ম নির্বাচনমুখী হতে হবে।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, অঞ্চল টিম সদস্য এবং রংপুর জেলার সাবেক আমীর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেন, এ বছর হলো জুলুমের অবসান ঘটানোর বছর। তাই সকল কর্মীর আত্ম-গঠন ও কর্মী হিসাবে আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সকলকে যত্নবান ও মনোযোগী হতে হবে।
এ ছাড়াও বক্তব্য পেশ করেন রংপুর-৪ আসনের নমিনি ও রংপুর মহানগর আমীর জনাব এটিএম আজম খান, রংপুর জেলা সহকারী সেক্রেটারি ও রংপুর-১ আসনের নমিনি অধ্যাপক মোঃ রায়হান সিরাজী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল গনি, ছাত্রশিবিরের রংপুর জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ গোলাম রব্বানী ও জেলা উত্তর সভাপতি মোঃ মমিন মিল্লাত।
সম্মেলনে কুরআনের শিক্ষা পেশ করেন রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য মাওলানা মোঃ আব্দুল খালেক। রংপুর-৫ আসনের নমিনি ও জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর সভাপতিত্বে এ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন জেলা সেক্রেটারী মাওলানা এনামুল হক। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
এন