মিয়ানমারে জান্তার শান্তি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল বিদ্রোহীরা
Share on:
মিয়ানমারে জান্তা সরকারের শান্তি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো।
গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে ভয়াবহ সংঘাতের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। ২০২১ সালে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই ভয়াবহ সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে উভয় পক্ষ। এই সংঘাতের মধ্যে এবারই প্রথম শান্তি প্রস্তাব করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, রাজনৈতিক সমাধানের জন্য দেশের সকল বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে শান্তি প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জান্তা সরকার। গত মাসে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ই-এর সফরের পর বিদ্রোহীদের শান্তি প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। ক্ষমতা দখলের পর থেকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে কোনোভাবেই নাগালের মধ্যে আনতে পারেনি তারা। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী দেশটির বেশির ভাগ অঞ্চল এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দখলে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্রোহীদের মিয়ানমারের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণেরও প্রস্তাব দিয়েছে জান্তা। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) বলেছে যে, জান্তার প্রস্তাবটি বিবেচনা করার মতো নয়। কেননা তারা মনে করে জান্তার নির্বাচন করার কোনও অধিকার নেই। ইতিমধ্যেই জান্তার দুর্বলতা প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। তারা আর বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে দমন করতে পারছেনা। জান্তাদের বেশ কয়েকটি প্রধান ঘাঁটি দখল করেছে বিদ্রোহীরা।
বিদ্রোহীদের সাথে সম্মুখ লড়াইয়ে হিমশিম খাচ্ছে জান্তা বাহিনী। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে ইতিমধ্যেই মিয়ানমারের অর্ধেকের বেশি অঞ্চল হারিয়েছে তারা। জুনে বিদ্রোহীদের একটি জোট চীন-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা ইউনান প্রদেশের একটি মহা সড়কের পাশে জান্তাদের একটি ঘাঁটিতে ব্যাপক হামলা চালায়, পরে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় জান্তার সেনারা। শান রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিমের সীমান্তবর্তী লড়াই মিয়ানমার হয়ে ভারত মহাসাগরের সাথে সংযোগ করার চীনের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। বেইজিংয়ের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই গত মাসে মিয়ানমার সফরের সময় দেশটির শাসক মিন অং হ্লাইংকে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে লক্ষ্য করে বৃহস্পতিবার জান্তা সরকার বিবৃতিতে বলেছে, তাদের স্থায়ী শান্তি, দলীয় রাজনীতি ও নির্বাচনের পথ অনুসরণ করা উচিত। গত তিন বছরের সংঘাতে মিয়ানমারের মানবসম্পদ, মৌলিক অবকাঠামোর ক্ষতি এবং বহু মানুষের প্রাণহানী ঘটেছে। কিন্তু বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জান্তার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা মনে করে জান্তার দেশ পরিচালনার নৈতিক কোনো অধিকার নেই। দেশকে যদি স্বাভাবিক রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথে এগিয়ে দেয়া হয় কেবল তখনই এসব শান্তি প্রস্তাবের কথা বিবেচনার কথা জানিয়েছে বিদ্রোহীরা।
এফএইচ