আগামীর বিশ্ব গড়তে ইসলামের কোনো বিকল্প নেই : গোলাম পরওয়ার
Share on:
আগামীর বিশ্ব গড়তে ইসলামের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, মানবরচিত মতবাদ দিয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। মুসলিম যুবকদেরকে বিশ্বে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা বাড়াতে হবে।
সোমবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে “ইন্টারন্যাশনাল লিডারশিপ সামিট ২০২৪ ইস্তাম্বুল’ শিরোনামে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ফেডারেশন অব স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন (ইফসু) এর কনফারেন্স তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনে বাংলাদেশের ছাত্র-যুবক বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। এ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণ যুব সমাজের গভীর দেশপ্রেম ও চরম সাহসিকতা ফুটে উঠেছে। তারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, জালিম শাসক ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কীভাবে বিজয়ী হতে হয়, কীভাবে মুক্তি সংগ্রাম করতে হয়। মূলত বাংলাদেশের ছাত্র-যুবকরাই ছিল এ আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। তাদের ত্যাগ-কুরবানী ও রক্তের বিনিময়েই বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকের এ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা আশা প্রকাশ করছি যে, বিশ্বের মুসলিম তরুণ, যুবক ও ছাত্র সমাজ ইসলামের দাওয়াত ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাহসী ভূমিকা পালন করবে। তারা বিশ্বের বুকে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিবে এবং সব ধরনের ফ্যাসিবাদী ও অত্যাচারী জালিম শাসকের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে সংগঠিত করবে। তারা সকল অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের ছাত্র যুবকরা বিশ্বের বুকে এই উদাহরণ পেশ করেছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের গণবিপ্লবে রাজনৈতিক দলের একটা ভূমিকা থাকলেও ছাত্র-যুবকদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই এই আন্দোলন সফল হতে পেরেছে। বাংলাদেশের এ পরিবর্তন দুনিয়ার জন্য একটি শিক্ষা। মুসলিম যুবকদেরকে বিশ্বে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা বাড়াতে হবে। এই লক্ষ্যে আধুনিক জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তি, মিডিয়া, আইটিসহ সকল ক্ষেত্রে মুসলিম তরুণ যুবকদেরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। অর্জিত জ্ঞানের ভিত্তিতে আগামীর বিশ্বকে গড়তে মুসলিম যুবসমাজকে নেতৃত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের পক্ষে বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার বলেন, ইফসু যুদ্ধ-বিগ্রহে নিমজ্জিত বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আমি মনে করি, এ লক্ষ্যে ইফসু বিশ্বে মুসলিম যুবকদের সংগঠিত করে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভবিষ্যতে ইফসোর মাধ্যমে একদল বলিষ্ঠ নেতৃত্ব তৈরি হবে এবং তারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
ইফসু সেক্রেটারি জেনারেল ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ক্ষমতাসীন একে পার্টির সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ও প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইয়াসিন আকতায়, ইফসুর সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল ও সুদানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রফেসর ড. মুস্তাফা উসমান ইসমাঈল, তিউনিসিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. রফিক আব্দুস সালাম, পাকিস্থানের রেফাহ ইউনিভার্সিটির রেক্টর প্রফেসর ড. আনিস আহমাদ, আমেরিকান ইকসা প্রেসিডেন্ট ড. মোহসিন আনসারি, তুরষ্কের রেফাহ পার্টির ভাইস-চেয়ারম্যান দোয়ান বেকিন এমপি, মুসলিম কমুউনিটি এসোসিয়েশন ইউকে এর চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার হামিদ হোসাইন আজাদ, মালয়েশিয়ার সিনেটর ও আমানা পার্টির নেতা হাসবি মুদা, তুরষ্কের আনাতালিয়া ইউথ প্রেসিডেন্ট সালিহ তুরান, পাকিস্থান জামায়াতের আন্তর্জাতিক সম্পাদক আসিফ লুকমান কাজি, মুসলিম ব্রাদারহুড কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মোস্তফা তুলবা, জামায়াতে ইসলামী ইন্ডিয়ার ন্যাশনাল সেক্রেটারি সোহেল কেকে, লেবানান জামায়াতে ইসলামী সাবেক আমীর প্রফেসর আজ্জাম আল আইয়ুবি, আবিম প্রেসিডেন্ট আহমেদ ফাহমি প্রমুখ।
উল্লেখ্য, এ কনফারেন্স-এ বৃটেন, আমেরিকা, মিশর, এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪৮টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুসলিম ছাত্র ও যুব নেতারা এ কনফারেন্স-এ বক্তব্য রাখেন।
এনএইচ