বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড দখলের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
Share on:
মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালসমূহের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ দখলে নেয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস সাপোর্ট ফোরামের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, দখল করা ট্রাস্টি বোর্ডকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আওয়ামী ট্রাস্টি বোর্ড হিসেবে গণ্য করছে। কেননা বহাল থাকা ট্রাস্টি বোর্ডকে বাতিল করতে হলে তার যথার্থ কারণ দর্শাতে হয়। কিন্তু কোনো প্রকার কারণ দর্শানো ও নোটিশ ছাড়া গায়ের জোরে ট্রাস্টি বোর্ডকে বাতিল করে নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার জন্য যেভাবে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা দরকার সরকার সেভাবেই ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেছে। সুতরাং এটি কোনো ট্রাস্টি বোর্ড নয়, বরং আওয়ামী বোর্ড বলে মনে করে শিক্ষার্থীরা। এ দলীয় বোর্ডকে শিক্ষার্থীরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে।
তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরই নিজস্ব ট্রাস্টি বোর্ড থাকে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী মহল সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি বোর্ড দখল করে চলছে। ধারাবাহিকভাবে নর্থ সাউথ, শান্ত-মরিয়াম’র পর মানারাতও সেই ষড়যন্ত্রের শিকার। এতে আমরা শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কাবোধ করছি। সম্প্রতি নর্থ সাউথ ও শান্ত-মারিয়ামের পর মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তারা আরও বলেন, শিক্ষা ও নৈতিকতার উৎকর্ষ সাধনের স্লোগান দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী এক ঝাঁক স্বপ্নচারী শিক্ষাবিদ মানারাতের সাথে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে এখন বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টি দখলে নেয়ার পায়তারা করছে একদল কট্টোর ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তি। আর তারা এই কাজটি করছে নীতি নির্ধারণী ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তন করে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, সীমাহীন দুর্নীতিগ্রস্ত বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী দীর্ঘ দিন ধরে ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার পায়তারা করছে। মানারাতের পর তাদের এই কালো হাত আরও অনেক প্রতিষ্ঠানে প্রসারিত হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এ অপচেষ্টার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে এক সভায় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পুনর্গঠন হয়, বাদ দেওয়া হয় আগের সব সদস্যকে। সভায় নতুন করে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
এ ছাড়াও অন্য সদস্যরা হলেন- সাবেক সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্কুল অব বিজনেসের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ, হাসুমনির পাঠশালার সভাপতি সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী মারুফা আক্তার পপি, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন ও সোশ্যাল ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিহির কান্তি ঘোষাল।
এমআই