অনুমোদনের আগেই কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা : মেডিক্যাল সেন্টারগুলোকে শোকজ
Share on:
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়ার আগেই যেসব এজেন্সি মালিক মেডিক্যাল সেন্টার থেকে মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন সেই সব প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শাও (শোকজ) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২৫ জুলাই) সংবাদ মাধ্যমকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমদ মুনিরুছ সালেহিন বলেন, আমার কাছে মোট ১১০টি মেডিক্যাল সেন্টারের নামের তালিকা আছে। এর মধ্যে কিছু মেডিক্যাল সেন্টারের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
তবে এ সংক্রান্ত কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ে ৬৮টি মেডিক্যাল সেন্টারের নাম চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয়ার সুপারিশ করেছে। সেগুলোর নামই আজ (সোমবার) আমাদের ঘোষণা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের মন্ত্রী মহোদয় হঠাৎ অসুস্থ থাকায় সেটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। তবে এই কাজগুলো আমরা দ্রুত সম্পন্ন করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেবো।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ। সিন্ডিকেট ইস্যুতে ঝুলে থাকা শ্রমবাজারে অবশেষে চিঠি চালাচালির পর মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে সব রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক মালয়েশিয়াতে কর্মী পাঠাতে পারবেন কিনা সে ব্যাপারে পরিষ্কার কোনো বক্তব্য এখনো মেলেনি। এমনকি কোন কোন মেডিক্যাল সেন্টার এবার মালয়েশিয়াগামীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারবে সে ব্যাপারেও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা গতকাল পর্যন্ত দেয়া হয়নি।
কিন্তু তার আগেই কিছু চিহ্নিত এজেন্সি মন্ত্রণালয়কে পাত্তা না দিয়ে মেডিক্যাল সেন্টার থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো শুরু করে দিয়েছে। এভাবে তারা অবৈধভাবে মেডিক্যাল করিয়ে কর্মীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ সচিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ বিভিন্নভাবে আমরা পেয়েছি। খোঁজখবর নিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর মন্ত্রণালয় থেকে ওই সব মেডিক্যাল সেন্টারকে শোকজ করেছি।
এ দিকে গত বৃহস্পতিবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাতটি রিক্রুটিং এজেন্সিকে মালয়েশিয়ার কর্মী বাছাইয়ের জন্য নিয়োগানুমতি দেয়া হয়েছে। তবে এসব এজেন্সিকে অবশ্যই বিএমইটির ডেটা ব্যাংক থেকে কর্মী সংগ্রহ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব।
সাতটি রিক্রুটিং এজেন্সি হচ্ছে আহমেদ ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-১১৪৬), এমিয়াল ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-১৩২৬), অরবিটালস এন্টারপ্রাইজ (আরএল-১১৩) পাথ ফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-১২৯৮), নিউ এজ ইন্টারন্যাশনাল (আরএল-৭০৩) ও সাউথ পয়েন্ট ওভারসিস লিমিটেড (আরএল-৬২২) ও ইম্পেরিয়াল রিসোর্সেস লিমিটেড।
তবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মসংস্থান বিভাগ সংশ্লিষ্ট কর্মীরা ইম্পেরিয়ালের নামটি রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেননি।
সচিব নিয়োগানুমতি প্রদান প্রসঙ্গে বলেন, এজেন্সিগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো কর্মী বাছাই করার কোনো ধরনের সুযোগ নেই।
এটা শুধু মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে নয়, যেকোনো দেশে কর্মী পাঠাতে হলে বিএমইটির ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপসে কর্মীরা রেজিস্ট্রেশন করবে। তারপর ডেটা ব্যাংক থেকে দক্ষ-অদক্ষ কর্মী এজেন্সিগুলো বাছাই করতে পারবে। সেভাবেই এজেন্সিগুলোকে নির্দেশনা দেয়া আছে।
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সাতটি এজেন্সিকে নিয়োগানুমতি দেয়ার মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে বলা যেতে পারে। এরপর যেসব প্রসেসিং রয়েছে সেগুলো সম্পন্ন হলে তখন বিএমইটির সার্ভার থেকে আমরা এফডব্লিওসিএমএসে পাঠিয়ে দেবো। অ্যাপ্রুভড লেখা এলে এই পর্বের কাজ শেষ হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এবার স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দ্রুত মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু করা। আর অভিবাসন ব্যয় আমরা মন্ত্রণালয় যেটা নির্ধারণ করে দিয়েছি (প্রায় ৮০ হাজার)। এর বেশি টাকা যদি কোনো এজেন্সি মালিক নিয়ে থাকেন, আর সেটার যদি উপযুক্ত প্রমাণসহ অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে ওই এজেন্সির বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এইচএন