tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ২১:৪৭ পিএম

সকল ধরনের সিগারেট কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে : তথ্যমন্ত্রী


00

ধূমপান সিগারেট পানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সিগারেট এখন ই-সিগারেট হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম ই-সিগারেটের প্রতি আসক্ত হচ্ছে। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন আইনে সকল ধরনের সিগারেট কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।


রোববার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘২০৪০ সালের আগেই তামাকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে DORP এনজিও’র মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া পাস হওয়া জরুরি। আর সেই আইনে এটিকে নিষিদ্ধ করা হলে জনগণের মধ্যে (বিশেষ করে কিশোর, তরুণ, নারী ও স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে) এসব পণ্যের সহজলভ্যতা ও ব্যবহার হ্রাস পাবে।

এ সময় মন্ত্রী নিজে কখনো ধূমপান করেননি মন্তব্য করে বলেন, আমার বন্ধুরা আমাকে অনেক বলেছে কিন্তু আমি ধূমপান করিনি। আমার বাবা একবার আমাকে ওয়াদা করিয়েছিলেন, আমি সেই ওয়াদা রক্ষা করেছি। সে কারণে আমি কখনোই ধূমপান করিনি। আমি জানি একবার ধূমপান করলে সেটায় আসক্তি ধরে যাবে। তখন চাইলেও সহজে এ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো না৷ আসক্তি খুব খারাপ জিনিস।

তরুণ প্রজন্মকে আসক্তি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আসক্তির একটা বিবর্তন হয়েছে। হয়েছে ধূমপানেরও। তরুণ প্রজন্ম ই-সিগারেটের প্রতি ঝুঁকছে। অনলাইনে অর্ডার করলে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেটা অনেক বেড়ে গেছে। এতে তরুণ প্রজন্ম দ্রুত আসক্তিতে পড়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ছেলেরা যেমন ধূমপানে আসক্ত। তেমনি মেয়েদের মধ্যেও এটি ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমাদের যে কোনো আসক্তি দূর করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তি, ফেসবুকে আসক্তি, এসব আসক্তি দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। যেমন মেয়েদের আসক্তি হিন্দি সিরিয়ালে বেশি। ছেলেদের মধ্যে ই-সিগারেট, ভ্যাপিং অনেক বেড়ে গেছে। এটা আইন করে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

খসড়া সংশোধনীগুলো মূল সংশোধনীর ধারায় যুক্ত করার প্রক্রিয়ায় সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।

এ বিষয়ে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) বাংলাদেশ-এর ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম মিঞা বলেন, বর্তমান আইনটি সংশোধিত হলে ব্যবহারকারীদের মাঝে ধূমপানের প্রবণতা কমবে, কিশোর-তরুণরা নতুন করে ধূমপান শুরু করতে পারবে না এবং অধূমপায়ীরা পরোক্ষ ধূমপানের স্বাস্থ্যক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সমন্বয়ক (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী প্রস্তাবনাগুলোর ব্যাখ্যা করেন এবং এ বিষয়ে মন্ত্রীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি-এর সভাপতি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজুল হক বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংশোধনী প্রস্তাবনাগুলোকে সমর্থন ও আইনটি দ্রুত পাস করার আহ্বান জানান।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ)-এর পক্ষ থেকে উপস্থাপনায় খসড়া সংশোধনীর ৬টি ধারা জানানো হয়। 

ধারাগুলো হলো :

১. ধূমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত।

২. বিক্রয়স্থলে তামাক পণ্য প্রদর্শন বন্ধ।

৩. তামাক কোম্পানির সিএসআর বন্ধ।

৪. প্যাকেটে/কৌটার সচিত্র সতর্ক বার্তার আকার বৃদ্ধি।

৫. খুচরা শলাকা বিক্রয় নিষিদ্ধ।

৬. ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট নিষিদ্ধ।

ইত্যাদি প্রস্তাবসমূহ মূল সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত হলে সাধারণ মানুষকে তামাকজনিত রোগের অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে এবং তামাক ব্যবহারজনিত স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে আনতে বিশেষ অবদান রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

এ সময় সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ডরপ- এর উপনির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান ও ডরপ-এর প্রেসিডেন্ট মো. আজহার আলী তালুকদার।

এন