দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৯
Share on:
রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জে যাত্রীবাহী দুই বাসের সংঘর্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জন ঘটনাস্থলে এবং ৪ জন রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর আঞ্চলিক সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ঘটনাস্থলেই পাঁচ জন মারা যান। চার জন রংপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের মধ্যে তিন জনের পরিচয় মিলেছে। তারা হলেন—নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক অলিউর রহমান জুয়েল, জোয়ান পরিবহনের বাসচালক জীবন ও যাত্রী ধনঞ্জয় চন্দ্র।
দুই বাসের সংঘর্ষে মোট ৩৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৫ জন। তাদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জোয়ান পরিবহনের যাত্রী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘রংপুর মেডিক্যাল কলেজ মোড় থেকে বাস ছাড়তে রাত সাড়ে ১১টা বেজে যায়। সিট বাদেও বাসের ছাদে অনেক যাত্রী তোলেন হেলপার, সুপারভাইজার ও চালক। এরপর হেলপারের সঙ্গে গাঁজা সেবন করতে করতে বাস চালানো শুরু করেন চালক।
এ সময় বাসের ভেতর গাঁজার ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে কয়েকজন যাত্রী প্রতিবাদ করেন। কিন্তু তারা কারও কথা শোনেননি। দ্রুত গতিতে বাস চালিয়ে সৈয়পুরের দিকে যাওয়ার পথে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। এর মধ্যেও চালক বাসের গতি কমাননি। যাত্রীরা ধীরে চালানোর অনুরোধ করলেও শোনেনি। এরপর হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। আর কিছুই বলতে পারবো না। জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমি হাসপাতালে।’
ওই বাসের আরেক যাত্রী আব্দুস সালাম জানান, ‘আমি বাসে উঠতেই ভেতরে গাঁজার গন্ধ পাই। যেহেতু ওটাই সৈয়দপুর যাওয়ার শেষ বাস ছিল, তাই বিষয়টা এড়িয়ে যাই। দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে গেছি।’
আব্দুস সালামের সঙ্গে সৈয়দপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন তার বন্ধু মোখতার। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনিও রংপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মোখতার অভিযোগ করে বলেন, ‘গাঁজা সেবন করে বাস না চালালে এবং বেপরোয়া গতিতে না চালালে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটতো না।’
তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে পিচ্ছিল সড়কে দুটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে রাত তিনটা পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে মারা যাওয়া পাঁচজনের মরদেহ তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানায় রয়েছে।
এইচএন