tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
শ্রেণীহীন প্রকাশনার সময়: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:১০ পিএম

বুকে প্রেমের ব্যথা, হাসপাতালে তরুণী


হাসপাতালে তরুণী১.jpg

কোনো সমস্যা না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মাহফুজুর রহমান। পরে তিনি খাদিজার সাথে একান্তে কথা বলে আসল বিষয় জানতে পারেন। খাদিজা ডাক্তারকে জানান, তার হার্টে কোনো ব্যথা নেই। মূলত প্রেমিক ওয়ালীউল্লাহকে বিয়ে করার জন্য এ অসুস্থতা।


নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের তরুণী খাদিজার সাথে বিয়ে ঠিক হয় এক প্রবাসীর ; কিন্তু তিনি ওই প্রবাসীকে বিয়ে করতে রাজি নন। তার ইচ্ছে প্রেমিক ওয়ালীউল্লাহর সাথে তার বিয়ে হোক।

এ বিষয়টি পরিবারকে বলতেও পারছে না। অবশেষে খাদিজা নিলেন অভিনব কৌশল।

হঠাৎ তার বুকে ব্যথার কথা জানান পরিবারকে। ব্যথা তীব্রতর হওয়ার অভিনয় শুরু করে সে। মেয়ের অসুস্থতায় তড়িঘড়ি করে সিদ্ধিরগঞ্জের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খাদিজাকে।

ডাক্তার অনেকগুলো টেস্ট করার পর জানতে পারে আসলে তার কোনো রোগই নেই; মূলত প্রেমিককে বিয়ে করার জন্য সে এ কৌশল নিয়েছে।

পরে বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালেই প্রেমিকের সাথে বিয়ে হয় খাদিজার। মহান বিজয় দিবসে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের।

জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এলাকার মো: ইউসুফের মেয়ে খাদিজা (১৮)। প্রবাসী এক যুবকের সাথে খাদিজার বিয়ে ঠিক করে পরিবার; কিন্তু বিয়েতে রাজি নয় ওই তরুণী।

কারণ তার সাথে ওয়ালীউল্লাহ নামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তাকেই বিয়ে করতে চান তিনি।

এ জন্য বুকে ব্যথার নাটক করেন খাদিজা। তাকে হাজী ইব্রাহীম খলিল শপিং কমপ্লেক্স অ্যান্ড প্রিয়ম নিবাসের মা হাসপাতালে ভর্তি করলে তার আদৌ কোনো সমস্যা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য হার্টের কয়েকটি টেস্ট করানোর হয়।

সবকিছু স্বাভাবিক এলে ডাক্তার নিশ্চিত হন, তার কোনো অসুস্থতা ছিল না। কোনো সমস্যা না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মাহফুজুর রহমান।

পরে তিনি খাদিজার সাথে একান্তে কথা বলে আসল বিষয় জানতে পারেন। খাদিজা ডাক্তারকে জানান, তার হার্টে কোনো ব্যথা নেই। মূলত প্রেমিক ওয়ালীউল্লাহকে বিয়ে করার জন্য সে অসুস্থতার অভিনয় করেছে।

ডা: মাহফুজুর রহমান প্রেমিক ওয়ালীউল্লাহ ও তার পরিবারকে হাসপাতালে ডাকেন। গত ১৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) ডা: মাহফুজ খাদিজার প্রেমিককে কল করে তার প্রেমিকার অবস্থা অনেক খারাপ জানিয়ে তাকে আসতে বলেন।

ছেলে আসতে রাজি হলে তিনি মেয়ের বাবাকে বিষয়টি জানান। এ ঘটনা জানতে পেরে মেয়ের বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে তার মেয়েকে বাড়িতে উঠতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেন; কিন্তু খাদিজা বিয়ের দাবিতে অনড় সিদ্ধান্তের কথা ব্যক্ত করেন।

অনেক বোঝানোর পর তারপর বিয়ের কার্যক্রম শুরু করেন মেয়ের বাবা। তখন ছেলের পক্ষ থেকে ছেলের দুলাভাই আর খালা উপস্থিত হন। পরবর্তী সময়ে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স এবং স্টাফদের সহযোগিতায় সুন্দরভাবেই তাদের বিয়ের আয়োজন শুরু হয়।

পরে উভয় পরিবারের সাথে কথা বলে, তাদের সম্মতি আদায় করে হাসপাতালেই বিয়ের ব্যবস্থা করেন ডা: মাহফুজুর।

রোগী ও চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকা হাসপাতালের নার্স, ডাক্তাররাও যোগ দেন ভিন্ন এ বিয়ের আয়োজনে। নার্স এবং খাদিজার স্বজনরা কনেকে বধূবেশে সাজিয়ে দেন। সম্পন্ন হয় বিয়ে। বিয়ে সম্পন্ন হলে অনেক নার্সকে দেখা যায় এ দম্পতির সাথে ছবি তুলতে।

হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার মাহফুজুর রহমান জানান, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তিনি অভিভাবকদের ঘটনা খুলে বলেছেন, স্বজনদের বুঝিয়েছেন। স্বজনরা তার কথা শুনে, পরিস্থিতি বুঝে কাজী ডেকে হাসপাতালেই বিয়ে সম্পন্ন করান।

এইচএন