রেলে নাশকতা : পাঁচ ট্রেন বন্ধে দুর্ভোগ
Share on:
নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল-অবরোধ ঘিরে বাসে আগুন দেওয়াসহ রেলেও নাশকতার ঘটনা ঘটছে। এর ফলে বিভিন্ন রুটের পাঁচটি ট্রেন বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
গরিবের ট্রেনখ্যাত দিনাজপুরে পার্বতীপুর থেকে রাজশাহীগামী ‘উত্তরা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি গত ২২ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে। কারণ চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য উত্তরাঞ্চলের মানুষ কম টাকার ভাড়ার এ ট্রেনের ওপরে ভরসা করতেন বেশি। ট্রেনটি বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন জয়পুরহাট, নাটোরের যাত্রীরাও। বিশেষ করে যারা এই ট্রেনে রাজশাহী-দিনাজপুরসহ আশপাশের জেলা ও উপজেলাতে অফিস করতে আসতেন তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বলেন, নাশকতার আশঙ্কায় আপাতত উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। পরিবেশ অনুকূলে এলে ট্রেন আবার চালু করা হবে।
এদিকে একই কারণে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরের মধ্যে চলাচল করা ‘আই আর’ লোকাল ট্রেন। এ ছাড়া টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থেকে রাত্রিকালীন ময়মনসিংহগামী ‘৩৭ আপ’ মেইল ট্রেনটি গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটেও এক জোড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ স্টেশনমাস্টার কামরুল ইসলাম জানান, আগে এ রুটে আট জোড়া ট্রেন চলত। এখন সাত জোড়া ট্রেন চলছে। রাত ১০টায় চলাচল করা এক জোড়া ট্রেন বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে ঢাকার কমলাপুর থেকে জামালপুরের তারাকান্দি চলাচল করা ‘আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস’ ট্রেন ও চট্টগ্রাম থেকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পর্যন্ত চলাচল করা ‘নাসিরাবাদ’ নামে একটি লোকাল ট্রেন গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে না। ট্রেন দুটির বর্তমান গন্তব্য কেবল জামালপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশন। ফলে এসব ট্রেন ব্যবহারকারীরাও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
তবে রেলপথে নাশকতা রুখতে স্টেশন ও রেললাইনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন রুটের ট্রেনগুলো ও রেলপথের নিরাপত্তায় পুলিশ টহলের পাশাপাশি আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার শাহ সূফি নূর মোহাম্মদ বলেন, রেলের নিরাপত্তায় আনসার সদস্য বাড়ানো হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি শুরু করা হয়েছে স্টেশনের চারপাশে নিরাপত্তা দেয়াল নির্মাণের কাজও।
যাত্রী অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে নাশকতার শঙ্কায় ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। এটিতে অসুবিধা হলেও মেনে নিতে হবে। কিন্তু বিষয়টি যাতে এমন না হয় যে, বন্ধ করা ট্রেন আর চালুই করা হলো না। আমরা নির্বাচন পর্যন্ত দেখব। এর পরও ট্রেন বন্ধ করে রাখলে আন্দোলনে নামব।
এনএইচ