tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ২১ মে ২০২৩, ১৫:৫৬ পিএম

দুদককে ব্যবহার করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে: জাহাঙ্গীর


৩

নিজেকে নির্দোষ দাবি করে গাজীপুর সি‌টি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, বিনা কারণে দুদককে ব্যবহার করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।


রোববার (২১ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি ২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের লাখ লাখ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছি। মেয়রের পদের মেয়াদ পাঁচ বছর, মাত্র তিন বছরের মাথায় ঢাকা থেকে চিঠি দিয়ে অবৈধভাবে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটা জনপ্রতিনিধির জন্য কতটুকু আইন অনুসরণ করা হয়েছে, সে বিচার আপনাদের। তিন বছরে আমি সরকারের কাছ সম্মানী ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করিনি।

তিনি বলেন, সরকার আমাকে দুটি প্রজক্টে মাত্র ৬০০-৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু দুদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে আমার বিরুদ্ধে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এটা কী করে সম্ভব? এটা কাল্পনিক, বানোয়াট ও মিথ্যা। আমাকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের করে হয়রানি করা হচ্ছে। যারা মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনের প্রচারণা চলছে। আমার জন্মদাতা মা মেয়র প্রার্থী, আমি প্রধান সমন্বয়কারী। ২৫ তারিখে ভোট। আজ ও আগামীকাল নির্বাচনের প্রচারণা শেষ দিন। ২১ ও ২২ তারিখ নির্বাচনের প্রচারণা শেষ দিন। এমন সময় দুদক আমাকে ডেকেছে। নির্বাচনের সময় আজ কেন আমাকে আসতে বাধ্য করলো। একটি মহল দুদককে ব্যবহার করে আমাকে হয়রানি করছে। একজন জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?

এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হিসেবে আজ দুদক এসেছি। আমি সময় চেয়ে আবেদন করেছিলাম, কিন্তু আমি জানতে পারিনি, আমাকে সময় দেওয়া হয়েছে কী না। সেটা জানতেই আজ আমি এখানে এসেছি। শুধু একটা কথা বলতে চাই, আমি গাজীপুর মানুষের জন্য কাজ করেছি। সেই কাজের পুরস্কার না দিয়ে, যারা অপরাধী, মিথ্যা চিঠি চালাচালি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।

সাবেক এই মেয়র আরও বলেন, আমি পলাতক মানুষ নই, বাংলাদেশ থেকে যারা অর্থ পাচার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। আজ যিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাকে হাইকোর্ট ২১টি বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে। যারা আমেরিকায় অর্থ পাচার করছে, তাদের দুদক ডাকলো না। আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বিলাসী জীবন-যাপন করি নাই সেজন্য হয়রানি করা হচ্ছে। আমি দুদকের কাছে ন্যায় বিচার আশা করি। আমি নির্দোষ, বিনা কারণে দুদককে ব্যবহার করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।

এর আগে গত ১৮ মে দুর্নীতির অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ, ব্যাখ্যা ও প্রস্তুত করতে এক মাস সময় চেয়েছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

ভুয়া ব্যাংক হিসাবে টাকা অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে পাঠানো নোটিশে ২১ ও ২২ মে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়।

দুদকের উপ-পরিচালক আলী আকবরের নেতৃত্বে দুটি আলাদা অনুসন্ধান টিম জাহাঙ্গীর আলমকে তলব করেছে। দুই টিমের অপর দুই সদস্য হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলিয়াজ হোসেন ও মো. আশিকুর রহমান।

এ বিষয়ে গত ১৭ মে সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের একটি অভিযোগ ও ২০২২ সালের আর একটি অভিযোগ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হয়। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইতোমধ্যে অনেকেরই বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। অনেক কাগজপত্রও সংগ্রহ করা হয়েছে।

অভিযোগের অনুসন্ধানের শেষ পর্যায়ে তার বক্তব্য প্রয়োজন। এ কারণেই তাকে তলব করা হয়েছে। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।

এমাআই