নাজাতের দশকের বিশেষ আমল ‘ইতিকাফ’
Share on:
পবিত্র রমজানের দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত শেষে ২১ রমজান থেকে শুরু নাজাতের দশক। নাজাতের দশকের অন্যতম আমল হলো- ইতিকাফ। এ ইবাদত প্রত্যেক মুসলমানের জন্য স্বেচ্ছায় পালনীয়। পবিত্র রমজান মাসের শেষ ১০ দিন মসজিদে ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্বাদা কিফায়া।
প্রতি বছর রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন মসজিদে ঢল নামে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের। আপন রবের সন্তুষ্টি অর্জনে এই সময় বিশেষ ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকেন মুসলিমরা।
ইতিকাফ হচ্ছে আল্লাহতায়ালার নৈকট্য ও ক্ষমা লাভের এক অনন্য সুযোগ। রমজানের ইতিকাফ শুরু করতে হয় ২০ তারিখের সূর্যাস্তের আগ থেকে। আর তা শেষ হয় রমজান শেষ হলে। অর্থাৎ ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা গেলে বা ৩০ তারিখ পূর্ণ হলে। সুতরাং যারা রমজানের শেষ দশকে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ, অনুকম্পা, ক্ষমা ও করুণার আশায় মসজিদে ইতিকাফ পালন করবেন, তারা আজ সন্ধ্যার মধ্যে মসজিদে যেয়ে অবস্থান নেবেন।
সহিহ বোখারি শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ যদি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতে চায়, তাহলে সে যেন ২০ রমজান সূর্যাস্তের আগেই ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করে।’
ইতিকাফ এক অনন্য ইবাদত। রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অন্বেষণের সর্বোত্তম মাধ্যম ইতিকাফ। ইতিকাফের লক্ষ্য আছে, বিধান আছে এবং আছে গুরুত্বপূর্ণ দর্শনচেতনাও।
ইতিকাফের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লামা হাফেজ ইবনে রজব বলেছেন, ‘ইতিকাফের উদ্দেশ্য হলো- সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং স্রষ্টার সঙ্গে সম্পর্ক কায়েম করা। আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় যতো গভীর হবে, সম্পর্ক ও ভালোবাসা ততো নিবিড় হবে এবং তা বান্দাকে পুরোপুরি আল্লাহর কাছে নিয়ে যাবে।’
ইতিকাফের এই উদ্দেশ্য সম্পর্কে বান্দা সচেতন থাকলে এবং অন্তরের গভীরে ইতিকাফের চেতনাকে লালনে সমর্থ হলে সীমিত সময়ের এই সাধনা বান্দার বাকি জীবনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। আল্লাহর সঙ্গে মানুষের যখন পরিচয় ঘটবে এবং সম্পর্ক গভীর হবে, তখন মানুষ স্রষ্টার সৃষ্টিকেও ভালোবাসতে সক্ষম হবে। বর্তমান সময়ে আমরা পৃথিবীতে, সমাজে, পরিবারে যে অন্যায়-অবিচার, জুলুম-নিপীড়ন, শঠতা, নিষ্ঠুরতা লক্ষ্য করছি; তা দূর করার ক্ষেত্রে ইতিকাফসমৃদ্ধ মানুষ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
এমআই