tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
অপরাধ প্রকাশনার সময়: ১৩ মার্চ ২০২২, ১৮:২১ পিএম

নিত্যপণ্যের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে : হাইকোর্ট


হাইকোর্ট

রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরির আশঙ্কায় সয়াবিন তেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।


হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার (১৩ মার্চ) এমন মন্তব্য করেন। এদিন সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ ও নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের বিষয়ে আদেশ দিতে সোমবার (১৪ মার্চ) দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট।

আজ আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহিদুল কবির। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনির হোসেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবির আদালতে বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ। ভোক্তা অধিকার আইনে আমরা প্রতিকার পাচ্ছি না। ভোক্তার অধিকার রক্ষা হচ্ছে না। সারাদেশের মানুষ কষ্টে আছে। তারা সহনীয় দামে তেল কিনতে পারছে না। এসব বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনগুলো আমরা আবেদনে যুক্ত করে দিয়েছি। তাই বলছি এসব বিষয়ে একটি নীতিমালা থাকা দরকার।

রিটকারী আইনজীবীকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, আপনি রশিদ আনেননি কেন? দাম যে বাড়লো তার জন্য তো আট-দশটি রশিদ আনতে পারতেন। আর কেবল তেল কেন? সামনে রমজান মাস। পেঁয়াজসহ আরও অনেক পণ্য আছে, সেগুলোসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি হতে পারে। শুধু সয়াবিন তেল নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের কথা রিটে অন্তর্ভুক্ত করুন। এমন আদেশ দিতে হবে যেন দেশের প্রত্যেকটা নাগরিকের উপকার হয়। টিসিবির নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণে নীতিমালা করা প্রয়োজন। সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যারা কুক্ষিগত করে রেখে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে সেই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।

আদালত রিটকারী আইনজীবীকে আরও বলেন, আপনি ভ্রাম্যমাণ (মোবাইল কোর্ট) আদালতের আইনটি ভালো করে দেখে আসুন। আমরা এমন রুল ও আদেশ দিতে চাই যেটি দেশের মানুষের কাজে আসে।

সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নির্দেশনা চেয়ে গত ৬ মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহিদুল কবির ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ উল্লাহ। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটটি করা হয়। আজ আদালতে রিটের বিষয়ে শুনানি হয়। শুধু সয়াবিন তেলের বিষয় নিয়ে রিটটি করা হলেও পরে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এর আগে গত ৮ মার্চ শুনানি হয়েছিল। তারও আগে জনস্বার্থে ৬ মার্চ দেশের বাজারে খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করা হয়। একই সঙ্গে সয়াবিনের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয় রিটে। তিন আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহিদুল কবির হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট আটজনকে বিবাদী করা হয়।

উল্লেখ্য, ৩ মার্চ দেশের বাজারে খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার ঘটনাটি উচ্চ আদালতের নজরে আনা হয়। এরপর এ বিষয়ে শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে যথাযথ একটি আবেদন করার পরামর্শ দেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। এর আগে সবশেষ গত মাসে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ায় সরকার। এতে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম হয় ১৬৮ টাকা। তবে দেশের বাজারে এর থেকে বেশি দামে তেল বিক্রি হতে দেখা যায়।

এমআই