পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী: কঙ্গনা রনৌত
Share on:
বলিউডের ‘কন্ট্রোভার্সি কুইন’ কঙ্গনা রনৌত, গত বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়কে ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয়’ বলে পোস্ট করেন কঙ্গনা। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, ২০২১ সাল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। ফেসবুক পোস্টে ১৯৭১ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথবাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের ছবিও পোস্ট করেছেন কঙ্গনা।
বলিউডের ‘কন্ট্রোভার্সি কুইন’ কঙ্গনা রনৌত সবসময় বিতর্কিত বিভিন্ন মন্তব্য করে আলোচনায় থাকেন।
এবার ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে নেটমাধ্যমে বাংলাদেশিদের তোপের মুখে পড়েছেন এই বলি তারকা।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়কে ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয়’ বলে পোস্ট করেন কঙ্গনা।
ওই পোস্টে তিনি দাবি করেন, ২০২১ সাল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। ফেসবুক পোস্টে ১৯৭১ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথবাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের ছবিও পোস্ট করেছেন কঙ্গনা।
অপরদিকে, কঙ্গনার ওই পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশিরা।
কঙ্গনাকে ইতিহাস বিকৃতি না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন কেউ কেউ। অনেকেই আবার কঙ্গনাকে ভুল সংশোধনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার প্রথম রানারআপ নিশাত নাওয়ার সালওয়া তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ওই পোস্টে কমেন্ট করেছেন, প্রিয় কঙ্গনা, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আপনার উচিত বাজে কথা বলার আগে ইতিহাস সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানা।
যুদ্ধের সময় ভারত আমাদের সাহায্য করেছিল এবং আমরা বাংলাদেশের জনগণ সত্যিই প্রশংসা করি।
১৯৭১ সালে আমরা ৩০ লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়েছি। মাতৃভূমির জন্য তারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা আমাদের বিজয় অর্জন করেছি। বাংলাদেশ একটি দেশ, যার জন্ম অনেক সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে।
আমাদের আবেগ, অশ্রুবিন্দু, সাহস এবং দেশপ্রেমের ফসল হলো ১৬ ডিসেম্বরের এই বিজয়। তাই দয়া করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো বন্ধ করুন।
অস্ট্রেলিয়া প্রসাবী সাব্বির চৌধুরী তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ওই পোস্টে কমেন্ট করেছেন, এটা পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের বিজয়!! আপনি মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর পোস্ট করার আগে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করুন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর ২০২১ ( রোববার) ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তার বক্তব্যে বলেছেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধ এখনও স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ভাগ ছিল ঐতিহাসিক ভুল। তারপর থেকে ভারতের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে প্রক্সি-যুদ্ধে লিপ্ত পাকিস্তান।
রাজনাথ সিং আরো বলেছেন, ‘সন্ত্রাসে মদত দেয়া এবং ভারত বিরোধী অন্য কর্মকা-ের মাধ্যমে ভারতকে ভাঙতে চায় পাকিস্তান।
১৯৭১ সালে তাদের পরিকল্পনা ভণ্ডুল করে দিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। আর বর্তমানে আমাদের সাহসী বাহিনী সন্ত্রাসের শিকড় নির্র্মূূল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
আমরা সরাসরি যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি। একইভাবে আমরা প্রক্সি-যুদ্ধেও বিজয় অর্জন করবো’।
রাজনাথ সিংয়ের এ বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অসিম ইফতিখার আহমেদ।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেয়ার যে অভিযোগ করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান।
এর একদিন পর গত ১৩ ডিসেম্বর (সোমবার ) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যকে অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন এবং প্ররোচনামূলক বলে আখ্যায়িত করা হয়।
বলা হয় সন্ত্রাসের বিষয়ে অপ্রমাণিত অভিযোগ করেছেন তিনি এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা অনলাইন ডন।
তিনি বলেছেন, প্রতিষ্ঠিত সত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজনাথ সিং অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন এবং প্ররোচনামূলক মন্তব্য করেছেন। এর কড়া নিন্দা জানায় পাকিস্তান।
তিনি সন্ত্রাস ইস্যুতে অপ্রমাণিত অভিযোগ এনেছেন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছেন। পাকিস্তানি এই মুখপাত্র আরো বলেন, এটা হলো ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন, সংশোধনের অভিপ্রায়ে এবং বিভ্রান্তিকর চিন্তাধারার ফল।
ভারতের আগ্রাসী বাসনাকে বানচাল করে দিতে পাকিস্তান পুরোপুরি সক্ষম এ বিষয়টি বিশ্ব জানে।
একই সঙ্গে ভারতের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী রাজনীতিতে পাকিস্তানকে টেনে না নেয়া বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এইচএন