tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:৩৬ পিএম

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় ব্যয় ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ সময়


76517_tib

সংসদ অধিবেশনে সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করতে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ সময় ব্যয় করেছে। এছাড়া রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আলোচনায় সময় ব্যয় হয়েছে ২৫ শতাংশ আর আইন প্রণয়নে সময় ব্যয় করা হয়েছে মাত্র ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ।


রোববার (১ অক্টোবর) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারদলীয় সদস্যদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় মোট ব্যয়িত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সময় ব্যয় হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা এবং সরকারের বিভিন্ন অর্জনের প্রশংসায়। এই বিষয় আলোচনা ব্যয়িত সময় যথাক্রমে ১৯.৮ শতাংশ ও ১৯.৪ শতাংশ সময়। প্রধান বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মোট ব্যয়িত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সময় (৪৪.৪%) ব্যয় হয়েছে দেশের চলমান অবস্থা পর্যালোচনা এবং সরকারের জন্য বিভিন্ন প্রস্তবনা প্রদানে।

এছাড়া বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অর্জন এবং প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসায় ব্যয়িত হয় ১১.৯ শতাংশ সময় এবং সরকার ও অন্য দলের সমালোচনায় ব্যয়িত হয় ১১.৬ শতাংশ সময়। অন্যদিকে অন্যান্য বিরোধী দলের সদস্যরা মোট ব্যয়িত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেছে সরকারের সমালোচনায় (৫৮.৬%)। এছাড়া বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও প্রস্তাবনায় ব্যয় হয় ২৫.৩ শতাংশ সময়।

এদিকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আলোচনায় মোট ব্যয়িত সময় ১৮৬ ঘণ্টা ২৬ মিনিট যা সংসদ কার্যক্রমের মোট ব্যয়িত সময়ের ২৫.০%। এর মধ্যে সরকারি দলের সদস্যদের ব্যয়িত সময় মোট ১৫৬ ঘণ্টা ২৮ মিনিট (৮৬.২%), প্রধান বিরোধী দলের ব্যয়িত সময় ২০ ঘন্টা ১৮ মিনিট (১১.২%) এবং অন্যান্য বিরোধী দলের ব্যয়িত সময় ৪ ঘন্টা ৪৮ মিনিট (২.৬%)।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইন প্রণয়ন কার্যক্রমে মোট ১২৪ ঘণ্টা ১৮ মিনিট সময় ব্যয় হয় যা সংসদ কার্যক্রমের ব্যয়িত সময়ের প্রায় ১৬.৭ শতাংশ। এখানে উল্লেখ্য, ২০১৯-২০-এ যুক্তরাজ্যে এই হার ছিল প্রায় ৪৯.৩ শতাংশ এবং ২০১৮-১৯-এ ভারতের ১৭তম লোকসভায় এই হার ছিল ৪৫.০ শতাংশ। বাজেট সম্পর্কিত ১২টি বিল ব্যতীত মোট উত্থাপিত বিলের সংখ্যা ১০৮ টি (সরকারি বিল ১০৭টি এবং বেসরকারি বিল ১টি) এবং পাসকৃত বিলের সংখ্যা ১৬ টি (নতুন বিল ৬৮, সংশোধনী বিল ২৬টি এবং রহিতকরণ বিল ২টি)।

সংসদে একটি বিল পাস করতে গড়ে সময় লেগেছে প্রায় ৭০ মিনিট, যেখানে সর্বনিম্ন সময় ছিল প্রায় ২৮ মিনিট এবং সর্বোচ্চ সময় ছিল প্রায় ৩ ঘন্টা ২৫ মিনিট। সর্বনিম্ন সময়ে পাসকৃত বিলটি ছিল “ভোটার তালিকা (সংশোধন) বিল, ২০২০” সর্বোচ্চ সময়ে পাসকৃত বিলটি ছিল "প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল, ২০২২ , আইন প্রণয়নের আলোচনায় সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ঘাটতি লক্ষ্যণীয় ছিল। বিলের ওপর নোটিস দিয়ে মাত্র ২৫ জন (৭%) সদস্য আলোচনায় অংশগ্রহণ করে। মোট নোটিসের ৯৫ শতাংশই উপস্থাপিত হয় প্রধান ও অন্যান্য বিরোধী দলের ১১ জন সদস্যের পক্ষ হতে।

সরকারি দলের সর্বমোট ৬ জন সদস্য ২টি বিলের ওপর সংশোধনী প্রস্তাব এনে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। বিল প্রতি গড়ে প্রায় ৮ জন সদস্য। জনমত যাচাই বাছাই এবং ৬ জন সদস্য সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বিলের ওপর আনীত সকল আপত্তি ও জনমত যাচাই বাছাই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।

পাসকৃত বিলের মধ্যে ৫২ শতাংশ বিলের ক্ষেত্রে কোন সংশোধনী গৃহীত হয়নি এবং ৪৭ শতাংশ বিলের ক্ষেত্রে আংশিকভাবে সংশোধনী গৃহীত হয়েছে এবং ১টি বিলের ক্ষেত্রে সকল নোটিসদাতারা প্রস্তাবিত সংশোধনীসমূহ প্রত্যাহার করে বিল পাস না করার আহ্বান জানান।

প্রস্তাবিত সংশোধনীসমূহে উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রস্তাব থাকলেও সংশোধনী গ্রহণের ক্ষেত্রে শব্দ সন্নিবেশ ও প্রতিস্থাপনই প্রাধান্য পেয়েছে। গৃহীত সংশোধনী বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এর মধ্যে প্রায় ৬৭ শতাংশ ছিল শব্দ সংযোজন বর্জন বা সন্নিবেশ এবং ৩৩ শতাংশ ছিল বিভিন্ন দফা উপ- দফা/ প্যারা সন্নিবেশ বা প্রতিস্থাপন।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে মন্ত্রীরা উত্থাপিত আপত্তি বা প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর না দিয়ে বিরোধী দলের অতীত ইতিহাস, বিলের প্রয়োজনীয়তা, যা যাচাই-বাছাই পূর্বক বিলের প্রস্তাব উত্থাপিত ইত্যাদি কারণ দেখিয়ে বিলের ওপর প্রদত্ত নোটিসসমূহ খারিজ করে দেন। নোটিস খারিজ করার ক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত ও পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা উপস্থাপন না করায় নোটিস প্রদানকারীদের একাংশ অসন্তোষ প্রকাশও করেন।

এনএইচ