কোম্পানীগঞ্জে ভোট বর্জন করলেন ওবায়দুল কাদেরের ভাই
Share on:
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জে জোরপূর্বক অ্যাজেন্ট বের করে দেয়া, অ্যাজেন্ট ফরম ছিঁড়ে ফেলা ও কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট শাহাদাত হোসেনসহ তিন প্রার্থী।
ভোট বর্জনকারী অপর দুজন হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা বেগম পারুল (প্রজাপতি)।
চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আনারস মার্কার গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের পক্ষ নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার (তার ভাই) নেতৃত্বে তার ছেলে তাসিক মির্জা ও ভাগিনারাসহ আমার কর্মী ও অ্যাজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন। তারা সাড়ে ৮টার মধ্যে সিল মেরে সব ভোট কমপ্লিট করেছে। মেয়র নিজে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট মারার অর্ডার দিয়ে নিজে ভোট মেরেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘গতরাতে আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর, বোমাবাজি ও কুপিয়ে জখম করেছে। যার কারণে অনেক এলাকায় আমার কর্মী ও অ্যাজেন্টরা বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি। প্রশাসনকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এমন অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচন কমিশনারের কাছে ভোট বাতিল ও পুনঃতফসিল ঘোষণার আবেদন জানাচ্ছি।’
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বলেন, ‘এখানে ভোটের পরিবেশ আগেও ছিল না। আমরা স্বাধীনভাবে কোনো মতপ্রকাশ করতে পারিনি, ভোট চাইতে পারিনি। ভোটারদের কাছে যেতে আমাদেরকে বাধা প্রদান করা হয়েছে। এ জন্য আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আজ সকালে আমার অ্যাজেন্ট যারা কেন্দ্রে গিয়েছে তাদের অ্যাজেন্ট ফরম ছিঁড়ে ফেলেছে, টেবিল ভেঙে প্রত্যেককে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। এখন ওপেন সিল মারছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভোটাররা কেন্দ্রে আসার সময় তাদের কুপিয়ে ও মাথা ফাটিয়ে ফেলে রেখেছে। তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসতে পারছে না। কিছু কিছু কেন্দ্রে পুলিশ আমাদের ভোটারদের পিটুনি দিয়েছে। এমন অবস্থায় আমরা ভোট মেনে নিতে পারি না, চলতে পারে না। এটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তিনবারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবের মান সম্মানে আঘাত করা হয়েছে। তার উপজেলায় সারা রাত বোমাবাজি করা হয়েছে, মানুষকে জখম করা হয়েছে, মানুষ ভোট দিতে পারছে না। তার ভাতিজা তাসিক ও ভাগিনা রাহাতের নেতৃত্বে ১০-১৫টা অনুমোদনহীন গাড়ি নিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে তাণ্ডব চালাচ্ছে। তাই আমি মাননীয় মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, এ ভোট বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেয়া হোক।’
অপরদিকে, বাদল অনুসারীদের বিরুদ্ধে চর এলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের ভাই খোকনসহ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ করেছেন আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত ও মৌখিক কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি নিজেই কোম্পানীগঞ্জে আছি। কয়েকটি কেন্দ্রে তাদের অ্যাজেন্টদেরও পেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ‘কোথায় কোন কেন্দ্রে অভিযোগ, আমাকে সুস্পষ্টভাবে জানানো হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচ