ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ইসরায়েলে রকেট হামলা হিজবুল্লাহর
Share on:
জ্যেষ্ঠ এক কমান্ডারকে হত্যার পর ইসরায়েলে ব্যাপক রকেট হামলা চালিয়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলি হামলায় জ্যেষ্ঠ ওই কমান্ডার নিহত হওয়ার পর ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে রকেট নিক্ষেপের এই ঘটনা ঘটল।
শক্তিশালী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি অবশ্য গত প্রায় ১০ মাস ধরেই ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা দক্ষিণ লেবাননে মারাত্মক ইসরায়েলি হামলার ‘প্রতিক্রিয়ায়’ বৃহস্পতিবার উত্তর ইসরায়েলে বহু সংখ্যক রকেট ছুড়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েল গোষ্ঠীটির শীর্ষ একজন কমান্ডারকে হত্যা করার পর এটিই তাদের প্রথম হামলা।
ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘(দক্ষিণাঞ্চলীয় শামা গ্রামে) ইসরায়েলি শত্রুর আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়... তারা ইসরায়েলে কয়েক ডজন কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করেছে...। ইসরায়েলি সেই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছিল।’
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, রকেট নিক্ষেপের কিছুক্ষণ পরই বিমান বাহিনী ‘হিজবুল্লাহর লঞ্চারে আঘাত করেছে, মূলত সেখান থেকেই এসব রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল’।
এর আগে বৃহস্পতিবার লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় চার সিরিয়ান নিহত হয়েছেন। গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই ওই অঞ্চলে গুলি বিনিময় করছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণাঞ্চলীয় শামা গ্রামে ইসরায়েলি হামলায়’ চার সিরিয়ান নাগরিক শহীদ হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে...। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ডিএনএ পরীক্ষা করা হলে এই সংখ্যা বাড়তে পারে।
এতে আরও বলা হয়, হামলায় লেবাননের পাঁচ নাগরিক আহত হয়েছে। জরুরি পরিষেবা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, নিহতরা কৃষি শ্রমিক এবং তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য।
এদিকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকর নিহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার চালানো এই হামলার মাধ্যমেই হিজবুল্লাহ প্রতিক্রিয়া জানাল। গোষ্ঠীটির নেতা হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন, শুক্রবার সকালে অভিযান আবার শুরু হবে।
মূলত গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েলের সংঘাত শুরুর পর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবেই সীমান্তে গুলিবিনিময় করছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এটিই ইসরায়েল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা।
বার্তাসংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত লেবাননে কমপক্ষে ৫৪২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ১১৪ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
অন্যদিকে হিজবুল্লাহর হামলায় ২২ ইসরায়েলি সৈন্য ও ২৫ বেসামরিক নাগরিকসহ মোট ৪৭ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত গোলাবর্ষণের কারণে সীমান্তের উভয়পাশে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এনএইচ