উন্নয়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতি করেছে দেশ : প্রধানমন্ত্রী
Share on:
বর্তমান সরকারের গৃহীত মেগা-প্রকল্পগুলো দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত সাড়ে তের বছরে উন্নয়নের সকল সূচকে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে বাংলাদেশ।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বাসস এক সংবাদে এ তথ্য জানিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সফলভাবে করোনা মহামারী মোকাবেলা করেছি। আমাদের মেগা-প্রকল্পগুলো দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছি। শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিচ্ছি। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আমরা বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ প্রণয়ন করেছি এবং এর বাস্তবায়নও শুরু করেছি।
ঐতিহাসিক ‘মুজিবনগর দিবস’ বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, ৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদে সংরক্ষিত মহিলা আসনসহ যথাক্রমে ১৬৭টি এবং ২৯৮টি আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।
১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সকল সংসদ সদস্য রেসকোর্স ময়দানে ৬-দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র প্রণয়নের শপথ গ্রহণ করেন। ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এ সময় ‘আমার দেশ তোমার দেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ স্লোগান দেন। তিনি ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে শতাধিক দেশী-বিদেশী সাংবাদিকের উপস্থিতিতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। পাশাপাশি এদিন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদিত হয়। মেহেরপুর হয়ে উঠে অস্থায়ী সরকারের রাজধানী এবং সেদিন থেকে এ স্থানটি ‘মুজিবনগর’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
তিনি বলেন, মুজিবনগর সরকারের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার দু’ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান বিমান বাহিনী বোমাবর্ষণ ও আক্রমণ চালিয়ে মেহেরপুর দখল করে।
ফলে, অস্থায়ী সরকার ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় এবং সেখান থেকে কার্যক্রম চালাতে থাকে। নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয় এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহকে প্রাধান্য দিয়ে মাত্র ৯ মাসেই একটি সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন। সাড়ে ৩ বছরের মাধ্যেই একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে রূপান্তরিত করেছিলেন।
দুর্ভাগ্য, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধীরা তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৩র নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকেও নৃশংসভাবে হত্যা করে। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছিল না।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং কৃতজ্ঞ চিত্তে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মোহাম্মদ মনসুর আলী এবং আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।
এছাড়াও বাণীতে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং দিবসটি উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন।
এইচএন