tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:২৬ পিএম

এক পিস আলুর দাম ১২ টাকা!


Untitled

হঠাৎ করেই অস্থির হওয়া আলুর বাজারের লাগাম টানতে বিদেশ থেকে আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও ভোক্তার হাতের নাগালে আসেনি দাম। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন আলু। তবে দাম আকাশচুম্বি!


খুচরা বাজারে নতুন আলু কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়। সেই হিসেবে একটি নতুন আলু (কেজিতে ১৫টি; ১৮০ টাকা কেজি) কিনতে ভোক্তার দিতে হচ্ছে ১২ টাকা। আর পুরাতন সাদা আলু বাজার ও মানভেদে ৪৬, ৪৮, ৫০ এবং কোথাও কোথাও মহল্লার দোকানগুলোতে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে একটি পুরাতন বড় আলু কিনতে (কেজিতে ৭-৮টি ; ৫০ টাকা কেজি) কিনতে ভোক্তাকে দিতে হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৬ টাকা। হালকা লালচে আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। একইসঙ্গে লাল ছোট আলুও ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এমন অবস্থায় বেশ বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষজন।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর নিউমার্কেট, আজিমপুর, পলাশীসহ আশেপাশের কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানগুলোতেই পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলুর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের তেমন একটা আগ্রহ নেই। ফলে বিক্রেতারাও নতুন আলু সংগ্রহে রাখছেন না। নিউমার্কেটের বনলতা কাঁচা বাজার মার্কেটের প্রায় দোকানেই দেখা গেল পুরাতন আলু সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দুই-তিনটি দোকানে অল্প পরিমাণে রাখা হয়েছে নতুন আলু।

বিক্রেতারা জানান, হঠাৎ করেই খুচরা বাজারে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্রেতারা এমনিতেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। আর নতুন আলুর দাম তো আরও বেশি। দোকান ও আলুর মানভেদে এই জায়গায় ৪৬ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকার মধ্যেই আলু বিক্রি হচ্ছে। তবে মার্কেটের বাইরে খুচরা দোকানগুলোতে বা মহল্লাতে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলেও জানান তারা।

মজিবুর রহমান নামে এক আলু ব্যবসায়ী বলেন, আলুর বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে সেটি হতো না। সরকার যদি আরও একমাস আগে থেকেই আলু আমদানির ঘোষণা দিয়ে দিত তাহলে বাজার আরও কমে যেত। অসাধু কিছু ব্যবসায়ী এবং কোল্ড স্টোরেজের দৌরাত্মে আলুর বাজার অস্থির হয়েছে। আমরা বিক্রেতারা অনেকটা অসহায়। পাইকারি বাজারেই অতিরিক্ত দামে কিনতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।

রফিকুল আমিন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আলু এখন অনেক কম চলছে। হোটেল কিংবা মেসের জন্যই মানুষ আলো নিচ্ছে। এছাড়া রেগুলার কাস্টমার যারা ছিল বাসা বাড়ির জন্য তারা আলু নেওয়া কমিয়ে দিয়েছে। শীতকাল আসছে। এখন সবজির পরিমাণ বাড়বে। আলুর দামে ভালো ভালো সবজি পাওয়া যাচ্ছে। তাই মানুষজন ওই দিকেই ঝুঁকছে। আলু যেভাবে আমদানি হচ্ছে চলতি সপ্তাহের দাম আরও কমবে বলে মনে হচ্ছে।

বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, সাধারণ মানুষের খাওয়ার আর কিছু থাকলো না। আলুভর্তা এবং ডাল-ভাতে কোনরকমে পেট ভরা যেত। এখন আলুর দাম বাড়ার কারণে সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে।

শামীম আহমেদ নামে ক্রেতা বলেন, আমি মেসের জন্য বাজার করতে এসেছি। সবকিছুর দামই বেশি। আগে যেখানে তরকারিতে মিল প্রতি দুই থেকে তিন টুকরা আলু দিতে পারতাম এখন সেখানে এক টুকরা দিতেও কষ্ট হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে গরিব মানুষের জন্য খুব কষ্ট হয়ে যাবে।

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬২ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর অনুমতির পর ২ হাজার ৭০০ টন আলু দেশে এসেছে। সোমবার (৬ নভেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মূলত, গত দুই-তিন মাস ধরেই আলুর বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় মাস দেড়েক আগে সরকার খুচরায় প্রতি কেজি আলুর দাম ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। এরপর নানা পদক্ষেপেও পণ্যটির দাম কমেনি। দাম নাগালে রাখতে সর্বশেষ আলু আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এনএইচ