tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১১:০৩ এএম

সিকিমের ভাঙনের মুখে আরও এক হ্রদ, ভয়ংকর বিপদের আশঙ্কা


sikkim_20231007_101806301

ভয়ংকর হয়ে উঠেছে ভারতের সিকিমের লোনক হ্রদ। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যায় বিধ্বস্ত হয়েছে বহু এলাকা। দুর্যোগ নেমে আসার অনেক আগেই এই হ্রদ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি)।


সংস্থাটি উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে পুরো সিকিমে ৩২০টি হিমবাহ হ্রদের সন্ধান পেয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ১৪টি বিপজ্জনক বলে জানিয়েছিল তারা। এবার উত্তর সিকিমের আরও একটি হ্রদ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। সেই হ্রদটিও ভাঙনের মুখে। তার নাম ‘সাকো চো’। এ নিয়ে জারি হয়েছে হাই অ্যালার্ট।

ওই হিমবাহ-হ্রদ ফেটে গেলে ভাসতে পারে উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স পর্যন্ত অংশও। খবরে বলা হয়েছে, আকস্মীক বন্যায় পানির স্তর বাড়লে বিপদসীমার ওপরে বইবে ডুয়ার্সের নদীগুলো। এর ফলে নেমে আসতে পারে আরও ভয়ংকর বিপর্যয়।

কয়েকদিনের ধারাবাহিক বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গে ৫৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ডুয়ার্সে বন্যা হলে তা আরও বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, মঙ্গন জেলার ওই হ্রদটি পানির চাপে যে কোনও মুহূর্তে ফেটে যেতে পারে। ফলে ফের ‘গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড’ (গ্লফ) হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিপদ এড়াতে লেক থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে লাচেন উপত্যকার থাঙ্গু, চেলা ও ইয়াথাং গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। খালি করে দেওয়া হয়েছে গ্যাংটক জেলার সিংতামের গোলিতার, মঙ্গনের দিকচু এবং পাকিয়ংয়ের রংপো আইবিএম এলাকা। তিস্তার পানি দুকূল ছাপিয়ে রাস্তায় নেমে এলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধসে পড়বে বলে আশঙ্কা।

উত্তর সিকিমের ১৬ হাজার ৪০৪ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ‘সাকো চো’ লেক। সাউথ লোনকের চেয়ে আয়তনে কম হলেও, এটির গভীরতা অনেক বেশি। গত কয়েকদিনে সেটির পানির স্তর প্রায় ৬ মিটার বেড়েছে। তাই অশনি সংকেত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ৫৯৪ ফুট গভীর ‘সাকো চো’র উপরে রয়েছে এক হাজার মিটার উচ্চতার একটি হিমবাহ। উষ্ণায়নের কারণে সেই হিমবাহে ভাঙন ধরেছে। বরফগলা পানিতে হ্রদের গভীরতা আরও বেড়েছে। বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা এই হ্রদ নিয়ে আগেই সতর্কতা জারি হয়েছিল।

লোনক হ্রদ ফেটে সিকিমে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার নেপথ্যে রয়েছে ‘গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড’ (জিএলওএফ)। তবে সিকিমের বুকে যে দুর্যোগ নেমে আসতে পারে, তা নিয়ে অতীতে বহু বার সতর্ক করেছিলেন গবেষকরা। গত পাঁচ দশকে এই হ্রদের গভীরতা দ্রুত বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে পানির স্তরও।

বর্তমানে এই হ্রদের গভীরতা ১০ তলা বাড়ির সমান। দৈর্ঘ্যে আড়াই কিলোমিটার এবং প্রস্থে ৬০০ মিটার। এই হ্রদের পানি বেরিয়ে যাওয়ায় এমন ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সিকিমে। আরও এক হিমবাহ গলা হ্রদ ফেটে গেলে কত বড় বিপদ যে হতে পারে সেটি ভেবেই শিউরে উঠছেন পরিবেশবিদরা।

এনএইচ