tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ২০:৪৯ পিএম

হঠাৎ কেন হেরে যাওয়ার আশঙ্কা ইউক্রেনের


image_140879_1732108713

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধে হেরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে ফক্স নিউজকে তিনি এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। ওই সাক্ষাৎকারের বরাতে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিসি।


জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন। মার্কিনিরা আমাদের প্রধান সামরিক সমর্থক। তহবিল বন্ধ হলে যুদ্ধে ইউক্রেন হেরে যাবে।

ইউক্রেনের নেতা বলেন, এটি খুব বিপজ্জনক হবে যদি আমরা ইউরোপে ঐক্য হারিয়ে ফেলি। যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো ইউক্রেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঐক্য।

জেলেনস্কির এ আশঙ্কার পেছনে রয়েছেন সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি আবার হোয়াইট হাউসে ফিরতে যাচ্ছেন। তার আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের প্রচার চালিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুদ্ধে টাকা খরচের পরিবর্তে আমেরিকানদের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য করদাতাদের অর্থ ব্যবহার করবেন তিনি।

ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও কীভাবে এটি সম্ভব করবেন তা বলেননি; তবুও ইউক্রেন আতঙ্কে আছে। কারণ, ট্রাম্প ইউক্রেনকে সহায়তা বন্ধের মাধ্যমে এ যুদ্ধ শেষ করার পরিকল্পনা করছেন বলে গুঞ্জন রটেছে। আর এর অর্থ হলো- ইউক্রেনের পরাজয়।

জেলেনস্কি ফক্স নিউজকে বলেন, যদি তারা তহবিল কমিয়ে দেয়; আমি মনে করি আমরা হারব। কিন্তু অবশ্যই আমাদের টিকে থাকতে হবে। আমরা লড়াই করব। আমাদের অস্ত্র উৎপাদন হচ্ছে তবে এটি জয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। এটি (ইউক্রেনের নিজস্ব অস্ত্র) মনে হয় বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট নয়।

সহায়তা তহবিল না কমিয়ে ট্রাম্প যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পুতিনকে চাপ দিতে পারেন। এতে তিনি সক্ষম কি না জানতে চাইলে জেলেনস্কি বলেন, এটি সহজ হবে না। তবে হ্যাঁ তিনি এটি করতে পারেন। কারণ, ট্রাম্প পুতিনের চেয়ে শক্তিশালী। পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে দুর্বল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শক্তি, কর্তৃত্ব ও অস্ত্র রয়েছে ।

এদিকে ইউক্রেনের যুদ্ধ হারের আশঙ্কায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে রাশিয়ার পারমাণবিক সক্ষমতা। সেই অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এ-সংক্রান্ত একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলার অনুমতির জবাব দিতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন পুতিন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে ডিক্রিতে বলা হয়েছে, পারমাণবিক শক্তিধর কোনো দেশের সমর্থন নিয়ে রাশিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হলে পাল্টা জবাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে মস্কো।

মঙ্গলবার যুদ্ধের ১ হাজারতম দিবস পার করছে রাশিয়া-ইউক্রেন। আজকের দিনেই পুতিন তার দেশের পরমাণুনীতি হালনাগাদ করে এই ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুতিনের মুখপাত্র এবং রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ।

নতুন এই ডিক্রিতে বলা হয়েছে, যেসব দেশের পরমাণু অস্ত্র নেই, তাদের যদি তৃতীয় কোনো দেশ বা পক্ষ এ ধরনের বিধ্বংসী অস্ত্র প্রদান করে— সেক্ষেত্রে সেসব দেশের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে রাশিয়া।

মঙ্গলবার মস্কোতে ক্রেমলিন কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে পেসকভ বলেন, পরমাণু অস্ত্র নেই— এমন কোনো আগ্রাসী দেশের সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ কোনো দেশ যদি জোটবদ্ধ হয়, তাহলে তা আর একক নয়, বরং যৌথ হামলায় পরিণত হয়। আর এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের নীতি অক্ষুণ্ন রেখে যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, আমরা সেটিই নিয়েছি।

পেসকভ আরও বলেন, রাশিয়া সবসময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করার বিপক্ষে; আমরা শুধু আমাদের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।

এসএম