বৈঠক থেকে বেরিয়ে যা বললেন মান্না-সাকি-মামুনুল-নুর
Share on:
দেশের চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আজ (বুধবার) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে যান নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ আরও অনেক।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যা সাতটার দিকে মান্না সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত সমস্ত চুক্তি খোলাসা করতে হবে। যে সমস্ত চুক্তি আমাদের স্বার্থের পরিপন্থি, সেগুলো বাতিল করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো এ প্রস্তাব দিয়েছেন। সরকারও এ বিষয়ে একমত হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশ স্বাধীনভাবেই নিজেদের সম্মান নিয়ে বন্ধুত্বের সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই। আমরা কারও কাছে মাথানত করব না। জাতীয় স্বার্থে দেশের সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ আছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিষয়ে দেশে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য এখানে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই ঐক্যের প্রকাশ হিসেবে সারা দেশে জাতীয় পতাকা হাতে সবাই দাঁড়াব। এ বিষয়ে হয়ত দ্রুতই সিদ্ধান্ত আসবে। বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতসহ অনেক দেশের জায়গা থেকে একটা অসত্যের যুদ্ধ চলছে। বলেছি সত্য দিয়ে এই যুদ্ধ মোকাবিলা করতে হবে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। সাম্প্রদায়িক উসকানির বিরুদ্ধে সব ধর্মের সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এই সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে। একটি জাতীয় রাজনৈতিক কাউন্সিল গঠন করা হোক দেশের সব অংশীজনদের নিয়ে। যাতে সরকার বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে দেশের সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ রেখে ক্রান্তিকালীন রাজনৈতিক পর্ব থেকে উত্তরণ হতে পারে।
মামুনুল হক বলেন, ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে সরকার যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে তার সঙ্গে দেশের সব রাজনৈতিক দল সংহতি প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের প্রশ্নে আমরা সবাই ঐকমত্য। বিশ্বে বাংলাদেশের যেসব মিত্র দেশগুলো রয়েছে বিশেষভাবে চারপাশের যেসব রাষ্ট্র থেকে ভারত তার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে উৎখাত হয়েছে, প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সংহতি গড়ে তুলে ভারতের এই আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণ করবে।
নুরুল হক নুর বলেন, দেশের স্বার্থে আজকে একটি নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে। দেশে জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি সর্বদলীয় রাজনৈতিক দলকে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বৈঠক করেছে। আগে কোনো দল কখনো এটি করেনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের মিডিয়াতে যে একটি সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে এটি মোকাবিলায় দেশের জনগণ, গণমাধ্যম এবং যারা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মূল ধারার মাধ্যমে এই অপপ্রচার এবং গুজবের বিরুদ্ধে একটি সঠিক প্রচারণার জন্য আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগরতলায় উপ-হাইকমিশনে এবং কলকাতায় হামলাসহ পতাকায় আগুন দেওয়া এবং ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের একের পর এক উসকানিমূলক বক্তব্য ভারত সরকারের অবস্থান কী না, আমরা সেটা জানার জন্য আলোচনা করেছি। ভারত সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে সেই অ্যাপ্রোচ হবে। না হলে বাংলাদেশ তার মিত্রদের নিয়ে কর্মকৌশল ঠিক করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর অংশীজনদের নিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য একটি জাতীয় সরকার গঠন করা এবং দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে আগামী ৬ মাসের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এনএইচ