tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
সারাদেশ প্রকাশনার সময়: ০৬ জানুয়ারী ২০২৪, ১৫:৩১ পিএম

শামীম হকের বাহিনী ও পুলিশ হুমকি দিচ্ছে : এ কে আজাদ


ajazad-20240106152222

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের এ কে আজাদ বলেছেন, নির্বাচনের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতে আমার নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তারা যাতে বাসায় না থাকেন এই ভয়ও দেখানো হচ্ছে। শামীম হকের বাহিনী ও পুলিশ এই হুমকি দিচ্ছে।


শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী মহল্লা এলাকায় অবস্থিত নিজ বাস ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলেন লিখিত বক্তব্যে এ কে আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ গঠন করতে বড় লক্ষ্য নিয়েই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফদিরপুর-৩ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। খুব দুঃখের সাথে জানাতে হয় ঈগলের পক্ষে জনসমর্থন দেখে, তা নস্যাৎ করার চেষ্টা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক ও তার সমর্থকরা। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে বারবার নানা কায়দায় বাধার সৃষ্টি করছেন। গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ঈগলের সমর্থক-নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, ভয়ভীতি অব্যাহত রয়েছে। ক্যাম্প পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটাচ্ছে। এসব ঘটনায় ৫টি মামলা এবং ১৪টি জিডি করার পরও দু-একটি ছাড়া তেমন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

তিনি বলেন, সর্বশেষ গত রাতেও (শুক্রবার) আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছেন নৌকা সমর্থকরা। আলিয়াবাদ ইউনিয়নে পলি মেম্বারের বাড়িতে হামলা করে ছয়জনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। মাচ্চরে হামলার ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছে। অম্বিকাপুরে সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাইদ চৌধুরীর চেয়ারম্যানের বাড়ির কাছ থেকে ঈগলের সমর্থক তোতা চৌধুরী ও রইস মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী সোহাগকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ভোটের মাঠে ভীতি সঞ্চার করতে ও সুষ্ঠু পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করতে হামলা হুমকি ভয় অব্যাহত রয়েছে। পারিবারিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে কানাইপুরে ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বেলায়েত ফকিরকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বিনা ওয়ারেন্টে আমার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পাশাপাশি মামলা নিয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অনেকেই।

প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে এ কে আজাদ বলেন, প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ নেন, যাতে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতে আমার নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তারা যাতে বাসায় না থাকেন এই ভয়ও দেখানো হয়। শামীম হকের বাহিনী ও পুলিশ এই হুমকি দিচ্ছে। একইসঙ্গে ঈগল সমর্থক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারও অব্যাহত রয়েছে। গতরাতেও পুলিশ ঈগল সমর্থক একাধিক নেতাকর্মীর বাসায় হানা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। এতে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এ কে আজাদ বলেন, আমি যখন আপনাদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করছি, ঠিক এই সময়টাতেই অনেক নেতাকর্মীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে আমার কাছে খবর আসছে। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এর মধ্যেই কোথাও কোথাও নিজেরা নিজেদের ক্যাম্পে আগুন দিয়ে আমার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি অব্যাহত রেখেছে। যাতে করে নির্বাচন ঘিরে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেখানে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াটা আমার লক্ষ্য, সেখানে আমার প্রতিপক্ষ শামীম হক শেষ মুহূর্তে এসে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা সৃষ্টি করছে। এমন পরিস্থিতিতে গণমাধ্যম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাধারণ মানুষ এবং সরকারই পারে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে। তাই আমি আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

লিখিত বক্তব্যে পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এ কে আজাদ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিসি কমিটমেন্ট করেছিলেন যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের অভিযোগগুলো মামলা হচ্ছে, আমাদের অভিযোগগুলো পড়ে রয়েছে।

এ কে আজাদ বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শামীম হকের এক কর্মী নৌকার একটি কেন্দ্র পেট্রল দিয়ে পোড়াতে গেলে পেট্রলের বোতলসহ জনতা আটক করে। কিন্তু ওই মামলায় আমাদের নেতাকর্মীদের জড়ানো হয়েছে।

এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ,জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পদিক আইভী মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, পুলিশ সুপার জেলায় একেবারে নতুন। তবে তিনি পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি তাকে অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

তিনি বলেন, একপাক্ষিক অভিযোগগুলো আমলে নেওয়া হচ্ছে- এ অভিযোগ ঠিক নয়। কেননা স্বতন্ত্র পার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যে কোনো মূল্যে নিশ্চিত করব। ভোট প্রদান ও গ্রহণে কোনো ভয়-ভীতিকর পরিবেশ কাউকে সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। ভোট কেন্দ্রে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্যহণ করা হয়েছে।

রিটানিং কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাজ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও মুক্ত পরিবেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়া। কাউকে জেতানো কিংবা হারানো আমাদের দায়িত্ব নয়। সে দায়িত্ব ভোটারদের।

এনএইচ