tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
সারাদেশ প্রকাশনার সময়: ১৭ জুন ২০২৪, ১৬:১১ পিএম

এক টুকরো মাংস চাই, তাড়িয়ে দিলেও হাত বাড়াই’


bagerhat-20240617155355

কোরবানির মাংস নিতে আসা বৃদ্ধা রহিমা বানু বলেন, মাংস চাইতে গিলে কখনও কখনও ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। তাদের কাছে তো শুধু এক টুকরো মাংস চাই, তাড়িয়ে দিলেও বাব বার হাত বাড়াই। যদি এক টুকরো মাংস দেয়!


আমরা গরিব মানুষ। ধনী লোকদের কোরবানিতে আমাদের হক থাকলেও তারা তা মানতে চায় না। বাড়ির সামনে গেলে তাড়িয়ে দেয়।

বছর ঘুরে আসে ঈদ, কিন্তু কোরবানি দেওয়ার সাধ্য সবার হয় না। তাই তো একটি দিন মাংস-ভাত খাওয়ার ইচ্ছে পূরণে কোরবানি দেওয়া লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দু-এক টুকরো করে মাংস সংগ্রহ করেন এসব দরিদ্র মানুষ। এ কাজে বয়স্ক বৃদ্ধ-নারী-পুরুষ ছাড়াও শিশুদেরও দেখা যায়।

সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে দেখা যায় কোরবানির মাংসের জন্য বাগেরহাট শহরের প্রায় বাড়ির গেটের সামনে ভিড় করছেন দরিদ্র মানুষরা।

গ্রাম থেকে শহরের সকল অলিগলিতে পশু কোরবানির পর কোরবানি দাতারা যখন মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত তখন দু-এক টুকরো মাংসের জন্য এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করে মানুষগুলো। এমন দৃশ্য জেলার প্রায় সবখানে দেখা যায়।

রামপালের বাশতিলী থেকে মাংস নিতে আসা নূর নাহার বলেন, আমাদের গ্রামে কয়েক বছর থেকে তেমন পশু কোরবানি হয় না। তাই এক টুকরো মাংসের আশায় ঈদের মতো উৎসবের দিনেও ব্যাগ নিয়ে শহরে আসতে বাধ্য হয়েছি।

শিশু রাকিব বলে, মাংস সংগ্রহ করতে আসছি। যা পাব বাবা-মাকে নিয়ে একবেলা খাব।

কোরবানি দেওয়া রামপালের শিমুল তালুকদার বলেন, বছরজুড়ে কোরবানি ঈদের মতো একটি দিনের জন্য যারা অপেক্ষা করেন তাদের বড় একটা অংশ গ্রামগঞ্জের এসব দরিদ্র মানুষ। নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরোয়, মাংস কেনা যাদের কাছে বিলাসিতা এই কোরবানি ঈদে তাদের স্বপ্ন জাগে মাংস ভাতের। তাই এই মানুষগুলো একটু সহানুভূতি কি পেতে পারে না?

কোরবানি দেওয়া একই উপজেলার আলামিন শেখ বলেন, কোরবানি দিয়ে থাকি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। সে ক্ষেত্রে ভাগের যতটুকু দরিদ্র মানুষেরা পাবে তা আমরা ভাগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্যাকেটিং করে সাধ্যমতো মানুষকে দেওয়ার চেষ্টা করি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেব আলী বলেন, এবার জেলায় প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার গবাদিপশু কোরবানি করা হয়েছে। এবার কোরবানিতে চাহিদার থেকে প্রায় ৯ হাজার ৬টি পশু বেশি ছিল।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, আল্লাহ তায়ালা ঈদুল আজহাকে এমনভাবে পালন করার তৌফিক দান করুক সকলের জন্য যেন ঈদুল আজহা হয়। আমরা জানি কোরবানির পশুর গোস্তকে তিন ভাগে বিভক্ত করতে হয়। এক ভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন এবং আরেক ভাগ গরিব মানুষের জন্য। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে যেন সেই কাজটি করার তৌফিক দান করুক।

তিনি আরও বলেন, আমরা যারা কোরবানি দিচ্ছি তারা যেন ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকতে পারি। এটাই কোরবানির সবচেয়ে বড় শিক্ষা হতে পারে।

সোহাগ মাহমুদ