tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রকাশনার সময়: ১৯ মার্চ ২০২৩, ২২:০৮ পিএম

ঠিক সংবাদ পরিবেশন একটি বড় চ্যালেঞ্জ : তথ্যমন্ত্রী


04

বর্তমান দ্রুততার প্রতিযোগিতার মধ্যে ঠিক সাংবাদিকতা, ঠিক সংবাদ পরিবেশন এবং একটি সংবাদপত্রকে গণমানুষের সংবাদপত্র হিসেবে গড়ে তোলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।


তিনি বলেন, দেশে গত ১৪ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ বা এক্সপোনেন্সিয়াল গ্রোথের পাশাপাশি অনেকগুলো চ্যালেঞ্জও যুক্ত হয়েছে। শুরু হয়েছে সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ দেওয়ার প্রতিযোগিতা। আর এটি করতে গিয়ে দেখা যায় এমন অনেক সংবাদ পরিবেশিত হয় যেগুলো আসলে ঠিক নয় এবং বিভ্রান্তিকর। অনলাইনের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে। এ কারণেই স্বাধীনতার পাশাপাশি প্রয়োজন দায়িত্বশীলতা।

রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার নবরূপে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, পত্রিকা বা যে কোনো গণমাধ্যম শুধুমাত্র সংবাদ পরিবেশন কিম্বা বিনোদনের জন্য নয়। একটি পত্রিকা মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়, অনুন্মোচিত বিষয়গুলোকে উন্মোচিত করতে পারে। সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার যে দিকে দৃষ্টিপাত করছে না, সে দিকে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে এবং করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা একটি বহুমাত্রিক গণতান্ত্রিক বিতর্কভিত্তিক সমাজে বসবাস করি। এই গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অবশ্যই প্রয়োজন। বাংলাদেশে গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে, যেভাবে অবাধে সবকিছু লিখতে পারে পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশে সেটি পারে না। অনেক উন্নত দেশেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন আছে একইভাবে তাদের কাজ ও প্রকাশ সম্পর্কে দায়িত্বশীলও থাকতে হয়। সেখানে ভুল বা অসত্য সংবাদের জন্য জরিমানা গুণতে হয়, শাস্তি পেতে হয়। আমাদের দেশে এমন নজির এখনো হয়নি। মাঝে মধ্যে প্রেস কাউন্সিল থেকে তিরস্কার করা হয়েছে। কারণ তিরস্কার করা ছাড়া কাউন্সিলের আর কোনো ক্ষমতা নাই। সুতরাং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

একইসাথে একটি সংবাদপত্র শিশু-কিশোর, তরুণ ও যুব সমাজের মনন তৈরিতে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমার ছেলেবেলায় অনেক দৈনিক পত্রিকায় ছোটদের পাতা থাকতো, সেখানে আমিও লিখেছি, সেটি অনেক আনন্দের। কিন্তু এখন আর ছোটদের পাতা নেই, হারিয়ে গেছে। রূপচর্চার পাতা আছে, রান্নাবান্নার পাতা আছে কিন্তু ছোটদের পাতা অনেক ক্ষেত্রে হারিয়ে গেছে। দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো, যেন সপ্তাহে না হোক, অন্তত ১৫ দিনে ছোটদের একটা পাতা থাকে। এটি আমাদের কিশোর-তরুণদের মনন তৈরি এবং প্রতিভা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

মন্ত্রী এ সময় পত্রিকায় সমাজের অনুন্মোচিত বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘রাস্তায় যে পাগলটা বিড়বিড় করে কথা আওড়ায় তার পাগল হওয়ার পেছনে একটা গল্প আছে। কিন্তু কেউ তা শোনে না, শোনার প্রয়োজনও মনে করে না। যে মানুষটি নদী ভাঙ্গনে কিম্বা অন্য কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে শহরের ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছে তাদের স্বপ্নের কথা কেউ লেখে না। যে মেয়েটি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়তো নিষিদ্ধ কোনো জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, তার বেদনার কথা কেউ ভাবে না, লেখে না। সেগুলোও উন্মোচিত হওয়া প্রয়োজন।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যমের বিকাশের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, কাজ করে যাচ্ছে। সে কারণে ২০০৯ সালে যেখানে দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল মাত্র সাড়ে ৪০০ এটি এখন সাড়ে ১২০০’র বেশি। টেলিভিশনের সংখ্যা ছিল ১০টি এখন সম্প্রচারে আছে ৩৬টি, আরো কয়েকটি খুব সহসা সম্প্রচারে আসবে। বেসরকারি রেডিও লাইসেন্স দেয়া আছে ২৪টি, ১৪-১৫টি সম্প্রচারে আছে। কমিউনিটি রেডিও’র লাইসেন্স দেয়া আছে প্রায় ৩ ডজনের কাছাকাছি এবং বেশিরভাগই সম্প্রচারে আছে। একইসাথে গত ১৪ বছরে অনলাইন গণমাধ্যমেরও ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে, হাজার হাজার অনলাইন প্রকাশিত হয়, আমাদের কাছে ৫ হাজারের বেশি আবেদন আছে রেজিস্ট্রেশনের জন্য। ইতোমধ্যে কয়েক শ’ রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয়েছে।’

দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাসিরুদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা এবং ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, দৈনিক দেশ বর্তমান পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এস এম জমির উদ্দিন প্রমুখ। সূত্র : বাসস।

এন