গণগ্রেপ্তারের পরও ইসলামাবাদের প্রবেশপথ ইমরান সমর্থকদের দখলে
Share on:
কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তিসহ চার দফা দাবিতে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভে নেমেছে তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই সমর্থকরা।
লাখো মানুষের বহর নিয়ে রাজধানীর উপকণ্ঠে পৌঁছেছেন তারা। গুঞ্জন উঠেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে দেশটিতে সরকার পতনের গণঅভ্যুত্থান হতে পারে। ফলে বিক্ষোভ নিয়ে আবারও চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের রাজনীতিতে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে দাঁড় করানো হয়েছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে। বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, ইমরানের কয়েক হাজার সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে দলের পাঁচজন সংসদ সদস্যও আছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে ইসলামাবাদের অনেক জায়গায় ইন্টারনেট পরিসেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইমরান খানের ডাকে বিভিন্ন শহর থেকে ইসলামাবাদ অভিমুখে রওনা হয় পিটিআই সমর্থকরা। তাদের দাবি, নির্বাচনে জালিয়াতি করে ক্ষমতায় এসেছেন শেহবাজ শরিফরা। তাই তাদের পদত্যাগ করতে হবে। ইমরানসহ পিটিআই দলের যে নেতারা বন্দি আছেন, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু শেহবাজ শরীফ সরকার কোনোভাবেই পিটিআই নেতাকে মুক্তি দিতে রাজি নয়।
বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে রোববার ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে আসার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ ঠেকাতে গণগ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয় নিরাপত্তা বাহিনীকে। লাহোরেও পুলিশ পিটিআইয়ের প্রচুর কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, যে কোনো ধরনের জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী ও ইমরানের ঘনিষ্ঠ নেতা আলি আমিন গান্দাপুর ভিডিওবার্তায় বলেছেন, মানুষ যেন শহরের ডি চকে জমায়েত হন। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি পূরণ না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ওখানে অবস্থান করার জন্য ইমরান খান নির্দেশ দিয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের এক অংশে নেতৃত্বে থাকা ইমরান খানের স্ত্রীও বলেছেন, ইমরান খানের মুক্তি ছাড়া ঘরে ফিরবেন না তিনি।
ইমরান খানের এবারের বিক্ষোভের ডাককে শেষ ডাক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার আহ্বানের পর রোববার (২৪ নভেম্বর) দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইসলামাবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগ দিতে গাড়ির বহর নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ছুটে যেতে দেখা যায়। ২০২৩ সালের আগস্টে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর থেকে তার দল তার মুক্তি এবং ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কথিত কারচুপির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। এবারও তার ডাকে ব্যাপক বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়েছে পিটিআই।
এদিকে সমাবেশ নিয়ে এক ভিডিওবার্তা দিয়েছেন ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি। তার এ আহ্বানকে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বিপজ্জনক হিসেবে দেখছেন। তারা সতর্ক করেছেন, এই বিক্ষোভ যদি সহিংসতায় রূপ নেয়, তবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও গভীর হবে।
এনএইচ