tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:১২ এএম

বিএনপির সমাবেশ শুরু, প্রধান অতিথি খন্দকার মোশাররফ


167

রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ নির্ধারিত সময়ের আগেই এ সমাবেশ শুরু হয়েছে।


শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় সমাবেশের সময় নির্ধারিত থাকলেও এর ৪০ মিনিট আগে সকাল ১০টা ২০ মিনিটেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশের মঞ্চে একে একে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হতে শুরু করেছেন।

ইতিমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু উপস্থিত হয়েছেন।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলালের পরিচালনায় ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনুকুল হাসান শ্রাবণ সহ আরও অনেকে মঞ্চে অবস্থান করছেন।

শনিবার গোলাপবাগ মাঠে ভোর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীদের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।

এদিকে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তবে এবার ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে মির্জা ফখরুলের জায়গায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান।

রাজধানীর গোলাপবাগে আজ ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা ঘোষণা করবে দলটি। যার ভিত্তিতেই আগামী দিনে যুগপৎ আন্দোলন হবে।

গত বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এই দফা চূড়ান্ত করা হয়। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই ১০দফা ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পরে হাইকমান্ডের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ গণসমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। 

এ ছাড়া নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা করা হবে এদিন। তবে হরতাল বা অবরোধের মতো কোনো কর্মসূচি দেওয়া হবে না। লংমার্চ, রোডমার্চ, মানবঢাল, অবস্থান, ইস্যুভিত্তিক প্রতিবাদ বা বিক্ষোভের মতো কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। দলটির একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবিষয়ে বলেন, আগামী দিনে এই সরকারের বিদায়ের জন্য কতগুলো চাটার অব ডিমান্ড বা দফা আমরা ঘোষণা করব। যারা যুগপৎ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে বিএনপির আলোচনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, যুগপৎভাবে আমরা যে ১০ দফা প্রণয়ন করেছি, তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঘোষণা করবেন। যার যার অবস্থান থেকে তারা ভবিষ্যতে এই দফাগুলোর দাবিতে আন্দোলনকে শাণিত করে যুগপৎভাবে আন্দোলনে আসবেন।

অপরদিকে দেশের বিভিন্ন জেলা ও রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিট থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে দেখা যাচ্ছে নেতাকর্মীদের। এরই মধ্যে গোলাপবাগ মাঠ বিএনপি নেতাকর্মীদের পদচারণায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে।

বিভাগীয় এই সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে মাইকে বিভিন্ন রকম স্লোগান দেওয়া হচ্ছে এবং দলীয় ও দেশাত্মাবধক গান পরিবেশন করা হচ্ছে।

সমাবেশ মঞ্চের ঠিক সামনে ঢাকা মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। তারা একের পর এক স্লোগান দিয়ে সবাইকে চঙ্গা রাখার চেষ্টা করছে। মাঝে মধ্যে মঞ্চ থেকে নেতারা কর্মীদের উদ্দেশে বিভিন্নরকম নির্দেশনাও দিচ্ছেন। 

অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে মঞ্চে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চেয়ার ছবি দিয়ে আলাদা করে রাখতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ঢাকার সমাবেশ মঞ্চে সে চিত্র এখনো চোখে পড়েনি।

মূল মঞ্চের ব্যানারের সামনে একটা এলইিডি স্ক্রিন বসানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সমাবেশ শুরুর পর তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখবেন। তবে এ বিষয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল কোনো নেতা কথা বলতে রাজি হয়নি।

রংপুর থেকে আসা বিএনপি কর্মী আয়নাল হক বলেন, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এ সমাবেশে এসেছি। আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ না করে ঘরে ফিরবো না। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য।

তিনি আরও বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার আত্যাচারের সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে, জনগণ তাদের আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এ জন্য সরকারের পদত্যাগ ছাড়া আমরা ঘরে ফিরবো না। 

সাভার থেকে আসা যুবদল নেতা শিপন মিয়া বলেন, নানা রকম পুলিশি তল্লাশি, হয়রানির শিকার হয়ে আমাদের সামবেশে যোগ দিতে হয়েছে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই বলে এতো অন্যায় নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষজনকে।

সকালে সমাবেশস্থলে মিছিল নিয়ে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান বলেন, সরকার আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। সমাবেশ বানচালের চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মহাসচিবসহ হাজারও নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। তার প্রতিবাদে আমরা এখানে এসেছি। এ সরকারের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।

প্রসঙ্গত, নানা নাটকীয়তা, সহিংসতা, গ্রেপ্তার শেষে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সমাবেশের অনুমতি পায় বিএনপি। এরপর থেকেই দলে দলে বিএনপি নেতাকর্মীরা গোলাপবাগ মাঠে আসতে শুরু করেন।

এমনকি সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামতেই রাজধানীর এই মাঠটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। পরে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরাও তাদের ব্যানার-ফেস্টুন সেটে দেন।

দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমাবেশে যোগ দিতে কয়েকদিন আগে থেকেই তারা ঢাকায় প্রবেশ করেছেন তারা। নানা চড়াই-উতরাই পার করার পরেও সমাবেশস্থল নির্ধারিত হওয়াতে উচ্ছ্বসিত তারা। তবে অনেকে আবার এটাকে মন্দের ভালো হিসেবেও দেখছেন।

এন